Friday, July 14, 2023

45>কিছু শ্যমাসঙ্গীত,(1খন্ড)okকৃষ্ণগান, ভক্তি গীতি।(১খন্ড)(1to22 + 4)

 45>কিছু শ্যমাসঙ্গীত,(1খন্ড)okকৃষ্ণগান, ভক্তি গীতি।(১খন্ড)(1to22 + 4)


★★1>গিরীশ চন্দ্র ঘোষের গান ★★

●1>আমার ধর্মকর্ম

●2>আমি প্রেমের ভিখারী

●3>আমি বৃন্দাবনে

●4>আর ঘুমায়ো না মন

●5>উদার অম্বর

●6>কাতরে ডাকি হে

●7>কি ছার আর

●8>কেশব কুরু করুণা

●9>জয় শিবশঙ্কর

●10>জুড়াইতে চাই

●11>তুমি তো মা ছিলে ভুলে

●12>দুর্গে দীনদুঃখহারিণী

●13>দেখা দে মা

●14>ধেয়ে ধেয়ে ধেয়ে

●15>ফিরে চাও প্রেমিক সন্ন্যাসী

●16>যাই গো, ওই বাজায় বাঁশি

●17>যোগাসনে মহাধ্যানে

●18>রাঙাজবা কে দিলো

●19>রাম-রহিম না জুদা করো

●20>শিব যদি মা

●21>হরি মন মজায়ে

●22>হামা দে পালায়।


★★★ চন্ডীদাসের গান ★★★


●1>কুল গেল কলঙ্ক হলো

●2>ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না বঁধু

●3>মথুরা-প্রত্যাগত শ্রীকৃষ্ণ

●4>রাধার কি হলো অন্তরে ব্যথা


======================

★1>গিরীশ চন্দ্র ঘোষের গান

 

●1>আমার ধর্মকর্ম

আমার ধর্মকর্ম সকলি গেল

শ্যামাপূজা মম হলো না,

মননিবারিতে নারি কোনমতে

ছি ছি ছি, যেন বলো না।


কুসুম-অঞ্জলি দিতে শ্রীচরণে

ত্রিভঙ্গ-মাধব পারে সখীমনে,

পীতবসনে হেরি গো নয়নে

ভাবিতে দিই গো বাসনা।


ভাবি বনমালী কালিয় শিখরে

হেরি বনমালী বাঁশরিয়া ধরে,

ত্রিনয়না ধ্যানে বঙ্কিম নয়নে

হেরি হই সই বিমন,

একি লো, একি লো ছলনা

মরি নিদয় হরললনা।

===============

 

●2>আমি প্রেমের ভিখারী


আমি প্রেমের ভিখারী,

কে প্রেম বিলায় এ নদীয়ায়।


কে প্রেমের মাতাল

প্রেম ঢেলে দেয়,

যে যত চায় তত পায়।


প্রাণে-প্রাণে শুনে কথা

তাই তো আমি এলেম হেথা,

আমি দেশে-দেশে বেড়াই ভেসে

থেকে গেছি প্রেমের গাঁয়।


 ==================

●3>আমি বৃন্দাবনে

আমি বৃন্দাবনে বনে-বনে

ধেনু চরাব,

আমি খেলব কত ছুটোছুটি

বাঁশি বাজাব।


খেলতে বড়ো ভালোবাসি

ছুটে ছুটে তাইতো আসি,

আমার মনের মতো খেলার সাথী

কত জন পাব।


খেলব জীবন-মরণ খেলা

আলো-কালোর দেখব মেলা,

আবার কান্না-হাসির মন্দ-ভালো

পায়ে লুটাব।


 =================

●4>আর ঘুমায়ো না মন

আর ঘুমায়ো না মন

মায়াঘোরে কতদিন,

রবে অচেতন।


কে তুমি, কী হেতু এলে

আপনারে ভুলে গেলে,

চাহ রে নয়ন মেলে

ত্যাজ গো সব।


রয়েছ অনিত্য ধ্যানে

নিত্যানন্দ হেরো প্রাণে,

তমোপরি হরি হেরো

অরুণ তপন।


 =============

●5>উদার অম্বর

উদার অম্বর শুন্য সাগর

শুন্যে মিলাও প্রাণ,

শুন্যে শুন্যে ফোটে কত শত ভুবন,

তারকা-চন্দ্রমা, কত শত তপন

শুন্যে ফোটে অভিমান।


অহম, অহম গীতি শুন্যে বিভাসিত

শুন্যে বিকশিত মনোবুদ্ধিচিত,

মদমাৎসর্য ভোক্তাভোজ

শুন্য সকলি ভান।


 ==================

●6>কাতরে ডাকি হে

কাতরে ডাকি হে, এসো

আঁখিবারি ঢালি রাঙাপদে,

ভুলিয়াছি কমলচরণ

মত্ত মহামোহমদে।


বিষয়সাধনা বিষয়কামনা

হারায়েছি হায় বিষয়সম্পদে,

রাখো নাথ, রাখো দাসে

রাখো রাখো এ বিপদে।


হেরি লক্ষ্যহীন ঘুরি দিন-দিন

তৃণ পাকে-পাকে যেন মহাহ্রদে,

বিষাদে ব্যাকুল কভু

কভু মাটিছাড়া মদে,

হৃদয়শ্যামল কুঞ্চিতকোমল

বিকাশ হৃদি-কোকনদে।


 =================

●7>কি ছার আর

কি ছার আর কেন মায়া,

কাঞ্চন-কায়া তো রবে না।


দিন যাবে দিন রবে না তো

কি হবে তোর তবে?

আজ পোহালো কাল কি হবে

দিন পাবি তুই কবে?


সাধ কখনো মেটে না ভাই

সাধে পড়ুক বাজ,

বেলাবেলি চল রে চলি

সারি আপন কাজ।


কেউ কারো নয়, দেখ না চেয়ে

কবে ফুটবে আঁখি,

আপন রতন বেছে নে চল

হরি বলে ডাকি।


 ==================

●8>কেশব কুরু করুণা

কেশব কুরু করুণা দীনে

কুঞ্জ-কাননচারী,

মাধব মনমোহন

মোহন মুরলীধারী।


ব্রজকিশোর কালিয়হর

কাতরভয়ভঞ্জন,

নয়ন বাঁকা বাঁকা-শিখিপাখা

রাধিকা হৃদিরঞ্জন।


গোবর্ধনধারণ বনকুসুমভূষণ

দামোদর কংসদর্পহারী,

শ্যামরাস রাসবিহারী

হরিবোল,হরিবোল,হরিবোল।


 =================

●9>জয় শিবশঙ্কর

জয় শিবশঙ্কর হর ত্রিপুরারি

পাশি-পশুপতি পিনাকধারী,

শিরে জটাজুট, কণ্ঠে কালকূট

সাধক জনগণ মানসবিহারী।


ত্রিলোকপালক ত্রিলোকনাশক

পরাৎপর প্রভু মোক্ষবিধায়ক,

করুণানয়নে হেরো ভকতজনে

লয়েছি শরণ চরণে তোমারি।


 ================___

●10>জুড়াইতে চাই

জুড়াইতে চাই কোথায় জুড়াই,

কোথা হ’তে আসি কোথা ভেসে যাই।


ফিরে ফিরে আসি, কত কাঁদি হাঁসি

কোথা যাই সদা ভাবি গো তাই,

কি খেলাই আমি খেলি বা কেন

জাগিয়ে ঘুমাই কুহকে যেন,

এ কেমন ভোর, হবে না কি মোর

অধীর অধীর যেমতি সমীর

অবিরাম ভক্তি নিয়ত ধাই।


আমি জানি না কে বা এসেছি কোথায়

কেন বা এসেছি কে বা নিয়ে যায়,

যাই ভেসে ভেসে কত দেশে দেশে

চারিদিকে গোল ওঠে নানা রোল,

কত আসে যায় কাঁদে হাসে গায়

এই আছে আর তখনি নাই।


কি কাজে এসেছি কি কাজে বা গেল

কে জানে কেমন কি খেলা হলো,

প্রবাহের বারি বহিতে কি পারি

যাই যাই কোথা কূল কি নাই।


করো হে চেতন যে আছো চেতন

কতদিনে আর ভাঙিবে স্বপন,

কে আছো চেতন ঘুমায়ও না আর

দারুণ এ ঘোর নিবিড় আঁধার,

করো তমোনাশ, হও হে প্রকাশ

তমা বিনা আর নাহিকো উপায়

তব পদে তাই শরণ চাই।


 

=================


●11>তুমি তো মা ছিলে ভুলে

তুমি তো মা ছিলে ভুলে

আমি পাগল নিয়ে সারা হই,

হাসে কাঁদে সদাই ভোলা

জানে না সে আমা বই।


ভাঙ খেয়ে মা সদাই আছে

থাকতে হয় মা কাছে কাছে,

ভাল মন্দ হয় গো পাছে

সদাই মনে ভাবি ওই।


দিতে হয় মা মুখে তুলে

নয়তো খেতে যায় গো ভুলে,

ক্ষেপার দশা ভাবতে গেলে

আমাতে আর আমি নই।


ভুলিয়ে যখন এলাম ছলে

(ওমা) ভেসে গেল নয়ন জলে,

একলা পাছে যায় গো চলে

আপন-হারা এমন কই।


 ==================

●12>দুর্গে দীনদুঃখহারিণী

জাগো মাগো,

দুর্গে দীনদুঃখহারিণী

শিবরাণী ভবভয়হারিণী,

জাগো মাগো হৃদয়ে

জয়তে জাগো জননী।


ওপারে দূরে বিপদসাগরে

দুর্গা, দুর্গা নাম বলো অভিরাম,

দয়াময়ী হরকরণী, হরভরণী।


রঞ্জিত-রাঙা চরণকমলে

মধুসাগর সতত উথালে,

প্রাণ সদা প্রিয় কুতুহলে

দূরে জাগে দুখরজনী।


 ==============

●13>দেখা দে মা

দেখা দে মা, দেখা দে,

দেখা দে মা, ও মা উমা

এই ছিলি কোথায় লুকালি,

মা ব’লে এসো মা উমা

মুছে ফেলি মনের কালি।


মা আমার ছিল না তেমন

স্বপ্নে কেন দেখলেম এমন,

চায় যেন গো কেমন-কেমন

কেন মা হয়েছে কালী।


হীরে মণি ভয় বাসি

উমা আমার শ্মশানবাসী,

উন্মাদিনী একি হাসি

দেখলাম যেন ছারকপালী।


কেন গো মা দিক-বসনা

কেন উমা শবাসনা,

ছিল না তো ত্রিনয়না

ছিল না তো মুণ্ডমালী।


 ================

●14>ধেয়ে ধেয়ে ধেয়ে

ধেয়ে ধেয়ে ধেয়ে

নাচে কালো মেয়ে,

খেলে বিজলী লয়ে।


রাঙাচরণ রাজে গো, রাজে

ভ্রমর গুঞ্জরে, মধুর মঞ্জীর বাজে।


কালোরূপে শতরবিচ্ছটা

দোলে এলোকেশ নবঘনঘটা,

কি বা মৃদুহাসি ঊষামলিন লাজে

শ্যামা বনফুলহারে সাজে।


 ================

●15>ফিরে চাও প্রেমিক সন্ন্যাসী

ফিরে চাও প্রেমিক সন্ন্যাসী

ঘুচাও ব্যথা কও না কথা,

কার প্রেমে হে উদাসী।


রয়েছ মত্ত ধ্যানে

তত্ত্ব তোমার কে জানে,

অনুরাগী শুধাই যোগী

প্রাণ দিলে কি লও হে আসি।


 ==================


●16>যাই গো, ওই বাজায় বাঁশি

যাই গো, ওই বাজায় বাঁশি

প্রাণ কেমন করে,

একলা এসে কদমতলায়

দাঁড়িয়ে আছে মোর তরে।


যত বাঁশরি বাজায়

তত পথপানে চাই,

পাগল বাঁশি ডাকে, ওগো রাই

না গেলে সে কেঁদে-কেঁদে,

চলে যাবে মানভরে।


 ================

●17>যোগাসনে মহাধ্যানে

যোগাসনে মহাধ্যানে মগ্ন যোগীবর

অনন্ত তুষারে যেন অনন্ত শিখর।


প্রলয় নীরব মাঝে একাকী পুরুষ রাজে

ভয়ে অগ্নিভস্ম মেখে থাকে কলেবর।


শিশু শশী নাহি আর, অন্ধকার নিরাকার

এক নাহি দুই আর, প্রকৃতি নিথর।


কালোবদ্ধ বর্তমানে গোমকেশ গোমপানে

নিত্যসত্য পূর্ণজ্ঞানে পূর্ণ মহেশ্বর।


 ==============

●18>রাঙাজবা কে দিলো

রাঙাজবা কে দিলো তোর পায়

মুঠো মুঠো,

দে না মা সাধ হয়েছে

পরিয়ে দে না মাথায় দুটো।


মা ব’লে মা ডাকবো তোরে

হাততালি দে নাচবো ঘুরে,

দেখে তুই হাসবি কত

আবার বেঁধে দিবি মাথায় ঝুঁটো।


 =================

●19>রাম-রহিম না জুদা করো

রাম-রহিম না জুদা করো

দিল কো সাচ্চা রাখো জী,

হাঁ জী, হাঁ জী করতে রহো

দুনিয়াদারি দেখো জী।


যব যায়সা, তব তায়সা হোয়ে

সদা মগন মে রহেনা জী,

মাট্টি মে ইয়ে বদন বনি হায়

ইয়াদ হরদম রাখনা জী,

কেয়া জানে কব দম ছুটেগা

উসকা নাহি ঠিকানা জী।


দুশমন তেরা সাথ ফিরতা

দেখো ভাই জো সাকো জী,

দুশমন সে বাঁচানেওয়ালে

উন বিন হায় নাহি কোই জী।


 =================

●20>শিব যদি মা

শিব যদি মা তোমার স্বামী

লুটায় কেন পদতলে,

বুক পেতে দেয় ভয়ে-ভয়ে

চায় মা তোর মুখমণ্ডলে।


চরণদুটি মনোরমা

তাই বুকে কি নেছে, শ্যামা,

তোর আবার কি স্বামী উমা

মা তুমি, মা, সবাই বলে।


ধরা কাঁপে পদভরে

বাজে না কি বুকে ধ’রে,

নইলে বলো কেমন ক’রে

শিব ধরেছে হৃদকমলে।


 ==================


●21>হরি মন মজায়ে

হরি মন মজায়ে লুকালে কোথায়

ভবে আমি একা, দাও হে দেখা,

প্রাণসখা রাখো পায়।


কালোশশী বাজালে বাঁশি

ছিলেম গৃহবাসী করলে উদাসী,

কুল ছেড়ে আজ অকূলে ভাসি

আমার হৃদবিহারী কোথায় হরি,

পিপাসী মন তোমায় চায়।


 =================

●22>হামা দে পালায়

হামা দে পালায়, পাছু ফিরে চায়

রাণী পাছে তোলে কোলে,

রাণী কুতূহলে, ‘ধরো-ধরো’ বলে

হামা টেনে তত গোপাল চলে।


পড়ে-পড়ে যায়, ধূলা লাগে গায়

আবার ওঠে, আবার পালায়,

মোছায়ে আঁচলে, রাণী করে কোলে

ব্রজের খেলায় পাষাণ গলায়।

=========================

===================

★★★ চন্ডীদাসের গান ★★★

 

●1>কুল গেল কলঙ্ক হলো

কুল গেল কলঙ্ক হলো

ঘর গেল দূরে,

দিবানিশি মন মোর

কানুর লাগি ঘুরে।


ঘরে যদি থাকি, সদাই চমকি

গুমরি-গুমরি মরি,

আমার নাহি হেন জন

করেনি বারণ,

যেমত চোরের লাগি।

আমার কেহ নাই

ব্যথার ব্যথী কেহ নাই,

আমি চোরের নারীর মতো

পুঞ্জক ধূলায় কাঁদি।


জ্বালা কহিব কত

কত ওঠে তাপ,

বচন না সরে মুখে

বুকে খেলে সাপ।

জ্বলে যে মরিব

বিচ্ছেদ-নাগিনীর বিষে,

সজনী, আমি বড়ো সাধ ক’রে

প্রেমের পুতুল,

আমার গোপন হিয়ায়

লুকায়ে রেখেছি।

সখী রে, তার মাঝে ছিল

বেদনা-নাগিনী,

দংশালো এখন জ্বলি,

জ্বলে মরি, মরি গো।


কত গুরুজনা গঞ্জয়ে নানা

তাহা কথা কারে কই,

আমার মরণ সমান করে অপমান

বঁধুয়ার লাগে সই।

আমি সয়ে থাকি

আমার জীবন মরণ পরাণ বঁধুর,

ভবযন্ত্রণা-মোচন কারণ

মুখ চেয়ে তবু সয়ে থাকি।


আমি কাহারে কহিব,

কে বা নিবারিবে

কে জানে মনের দুখ,

আর চণ্ডীদাস কহে

করো হে ঘোষণা,

তুমি তবে তো পাইবে সুখ।


 ===========_==____

●2>ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না বঁধু

ছুঁয়ো না ছুঁয়ো না বঁধু, ওইখানে থাকো,

মুকুর লইয়া চাঁদ মুখখানি দেখো।


নয়নের কাজর বয়ানে লেগেছে

কালোর উপরে কালো,

প্রভাতে উঠিয়ে ও মুখ দেখিনু

বঁধু, দিন যাবে আজ ভালো।


অধরের তাম্বুল পরাণে লেগেছে

ঘুমে ঢুলু-ঢুলু আঁখি,

আমা পানে চাও, ফিরিয়া দাঁড়াও

বঁধু, নয়ন ভরিয়া দেখি।


বঁধু, চাঁচর কেশের চিকন চূড়া

সে কেন বুকের মাঝে,

সিন্দুরের দাগ, বঁধু হে

আছে সর্বগায়ে, মোরা হ’লে ম’রি লাজে।


নীলকমল বামরু হয়েছে,

মলিন হয়েছে দেহ,

কোন রসবতী পেয়ে সুধানিধি

নিঙাড়িল অতিস্নেহ।


কুটিল নয়নে কহিছে সুন্দরী

অধিক করিয়া করা,

কহে চন্ডীদাস আপন স্বভাব

বঁধু,ছাড়িতে না পারে চোরা।


 =================

●3>মথুরা-প্রত্যাগত শ্রীকৃষ্ণ

মথুরা-প্রত্যাগত শ্রীকৃষ্ণ দরশনে

শ্যাম সোহাগিনী রাই,

বড়ো অভিমান ভরে বলে গো

বড়ো অভিমান ভরে বলে –

কি আর বলিব তোরে রে বঁধুয়া,

কি আর বলিব তোরে?

অতি অলপ বয়সে পিরীতি শিখায়া

রহিতে না দিলি ঘরে।

আমায় ঘরে রইতে দিলো না গো,

আমায় ঘরের বাহির করে দিলো

ঘরে রইতে দিলো না গো,

কালা তোমার বাঁশির টানে

ঘরে রইতে দিলো না গো,

কালা রহিতে না দিলি ঘরে।


সদা বাঘিনীর ঘরে বসত হামারি

না ছোড়ি দীর্ঘশ্বাস,

আমি কালার বিরহে জলদি না হেরি

না পরি নীলের বাস।

আমি পরে থাকি সাদাখানি

পাছে লোকমাঝে হয় জানাজানি,

তাই, পরে থাকি সাদাখানি,

তবু লোকে করে কানাকানি

তারা কেন করে কানাকানি,

বলি, তারা কি সব কানা কানী?

যারা করে কানাকানি,

বলি, তারাই কানা তারাই কানী

যারা করে কানাকানি,

তারা দেখে কি নীলের বাস।


সখী রে, আমি নীলের বসন পরি না

আমি মেঘের দিকে তাকাই না,

সখী রে আমার,

তবু লোকে কেন কানাকানি করে?

তাই স্থির করেছি,

আমি কামনাসাগরে কামনা করিব

সাধিব মনেরই সাধা,

আমি মরিয়া হইব শ্রীনন্দের নন্দন

তোমাকে সাজাব রাধা।

তখন বুঝবে বঁধু,

রাধা হয়ে বুঝবে বঁধু

এই নারী হওয়ার কেমন জ্বালা,

রাধা হয়ে বুঝবে বঁধু।


পিরীতি করিয়ে ছাড়িয়ে যাইব

রহিব কদম্বমূলে,

আমি ত্রিভঙ্গ হইয়ে বাঁশরি বাজাব

যখন যাইবি জলে।

আমি নাম ধরিয়ে ডাকবো তোমার

এই ঘাটে এসো রাধা বলে,

নাম ধরিয়ে ডাকবো তোমার

এই বাঁশরিতে ধ্বনি তুলে,

নাম ধরিয়ে ডাকবো তোমার

এই মন-কদম্বের ডালে বসে,

নাম ধরিয়ে ডাকবো তোমার।


মুরলী শুনিয়ে মোহিত হইবি

সরল কুলের বালা,

দ্বিজ চন্ডীদাস ভনে তখনই বুঝিবি

পিরীতি কেমন জ্বালা।

জনম যাবে,

তোমার কাঁদতে কাঁদতে জনম যাবে

বলি এই তো কাঁদার প্রথম শুরু,

কাঁদতে কাঁদতে জনম যাবে।

বলি পিরীত করার এমনি রীতি

কাঁদতে কাঁদতে জনম যাবে,

এই ব্রজের ধূলায় গড়া দিয়ে

কাঁদতে কাঁদতে জনম যাবে,

জয় রাধে, দয়া করো ব’লে

তোমার কাঁদতে কাঁদতে জনম যাবে।


 ==================

●4>রাধার কি হলো অন্তরে ব্যথা

রাধার কি হলো অন্তরে ব্যথা

বসিয়া বিরলে থাকয়ে একলে,

না শুনে কাহারো কথা।

রাই-হৃদে এত কিসের ব্যথা

থাকে বিরলে, শোনে না কথা,

শুকায়ে গেলো কনকলতা।


সদাই ধেয়ানে চাহে মেঘপানে

না চলে নয়নতারা।

বুঝি লেগেছে চোখে মেঘের কাজল

কখন আঁখি হয় বা সজল,

নামবে বুঝি মেঘের বাদল।


বিরতি আহা রে রাঙাবাস পরে

আ মোর যাই,

আহা রে আহা রে

রতি নাই আহা রে,

দুখ কব কাহারে

যেমতি যোগিনী পারা।


এলাইয়া বেণী ফুলের গাঁথনি

দেখ হে খসায়ে চুলি,

হসিত বয়ানে চাহে মেঘপানে

কি কহে দুহাত তুলি।

হয়েছে একাকার

হাসিসাথে জোছনার

চাঁদ গেছে বদন তার।


একদিঠ করি ময়ূর-ময়ূরী

কণ্ঠ করে নিরীক্ষণে,

চন্ডীদাস কয় নবপরিচয়

কালিয়া বঁধুর সনে।

রাধার নূতন দেখা কালিয়া সনে

তাই যত অঘটন দেহে মনে,

নিজ পরিণাম নাহি গনে।


 ●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●●

■■■■■■■■■■■■■■■■■■■■


No comments:

Post a Comment