Friday, July 14, 2023

43>কিছু শ্যমাসঙ্গীত,(3খন্ড)ok কৃষ্ণগান, ভক্তি গীতি। = (৩খন্ড)(1 to 50)

 


43>কিছু শ্যমাসঙ্গীত,(3খন্ড)ok কৃষ্ণগান, ভক্তি গীতি। = (৩খন্ড)(1 to 50)

★★★ জয় জয় গোবিন্দ ★★★(3খন্ড)

★1>(শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম)

★2>জাগো হে এই নগরবাসী

★3>জেনেছি জেনেছি তারা

★4>ডুব-ডুব-ডুব

★5>তোর কোলে লুকায়ে থাকি

★6>তোর পদতলে আছি পড়ে

★7>তোর মতো মা এত আপন

★8>ত্রিনয়নী দুর্গা,

★9>দেখা দে মা

★10>দীনবন্ধু কৃপাসিন্ধু

★11>দুরিতবারিনী

★12>দোষ কারো নয়

★13>নয়ন তুলে দেখ মা শ্যামা

★14>নয়নাভিরাম

★15>নেচে নেচে আয় মা শ্যামা

★16>পাখি তুই ঠিক বসে থাক

★17>পূজিব তোমারে শ্যামা

★18>প্রেম ভরে মন রে গাহ

★19>ফিরে যা কমলাকান্ত

★20>ভয়ঙ্করী তোরে কালী

★21>বড় ধুম লেগেছে

★22>বড়ো হতে চাই না

★23>বারে বারে যে দুখ

★24>বিফলে দিন যায়

★25>ভজ গৌরাঙ্গ

★26>ভজ রাধাকৃষ্ণ গোপালকৃষ্ণ

★27>ভেবে দেখ মন

★28>মন চল নিজ নিকেতনে

★29>মনের বাসনা শ্যামা

★30>মরিব মরিব সখী

★31>মা আছেন আর আমি আছি

★32>মা মা বলে ডাকি

★33>মাগো আনন্দময়ী

★34>মাধব হে

★35>মায়ের পায়ের জবা হয়ে

★36>যখন দুচোখ ভ’রে

★37>মুরলী বাজে

★38>যতনে হৃদয়ে রেখো

★39>যদি ডাকার মতো পারিতাম ডাকতে

★40>যে কটা দিন।

★41>রঙ দিও না শ্যাম

★42>রাই জাগো গো

★43>শ্যামা নামের লাগল আগুন

★44>শ্যামা মন-ছাঁচে তোমাকে ফেলে

★45>শিব, শিব, মহাশিব

★46>সকলি তোমারি ইচ্ছা

 ★47>সখাসঙ্গে খেলা করে

★48>সখী লোকে বলে কালো

★49>সময় তো থাকবে না

★50>হরি হে।


===================

■■■ জয় জয় গোবিন্দ ■■■(3খন্ড)

★1>(শ্রীকৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনাম)

জয় জয় গোবিন্দ গোপাল গদাধর

কৃষ্ণচন্দ্র করো কৃপা করুণাসাগর,

জয় রাধে গোবিন্দ গোপাল বনমালী

শ্রীরাধার প্রাণধন মুকুন্দ মুরারী,

হরিনাম বিনে রে ভাই, গোবিন্দনাম বিনে

বিফলে মনুষ্যজন্ম যায় দিনে দিনে।


শ্রীনন্দ রাখিল নাম নন্দের নন্দন

যশোদা রাখিল নাম যদু বাছাধন,

উপানন্দ নাম রাখে সুন্দর গোপাল

ব্রজবালক নাম রাখে ঠাকুর রাখাল,

সুবল রাখিল নাম ঠাকুর কানাই

শ্রীদাম রাখিল নাম রাখাল রাজা ভাই,

ননীচোরা নাম রাখে যতেক গোপিনী

কালাসোনা নাম রাখে রাধা বিনোদিনী,

কুব্জা রাখিল নাম পতিতপাবনহরি

চন্দ্রাবলী নাম রাখে মোহন বংশীধারী,

অনন্ত রাখিল নাম অন্ত না পাইয়া

কৃষ্ণনাম রাখে গর্গ ধ্যানেতে জানিয়া,

কণ্বমুনি নাম রাখে দেব চক্রপাণি

বনমালী নাম রাখে বনের হরিণী,

গজহস্তী নাম রাখে শ্রীমধুসূদন

আজমিনা নাম রাখে দেব নারায়ণ।


পুরন্দর নাম রাখে দেব শ্রীগোবিন্দ

দ্রৌপদী রাখিল নাম দেব দীনবন্ধু,

সুদাম রাখিল নাম দারিদ্রভঞ্জন

ব্রজবাসী নাম রাখে ব্রজের জীবর,

দর্পহরি নাম রাখে অর্জুন সুধীর

পশুপতি নাম রাখে গরুড় মহাবীর,

যুধিষ্ঠির নাম রাখে দেব রূরবর

বিদুর রাখিল নাম কাঙালের ঠাকুর,

বাসুকী রাখিল নাম দেব সৃষ্টিস্থিতি

ধ্রুবলোকে নাম রাখে ধ্রুবের সারথি,

নারদ রাখিল নাম ভক্ত-প্রাণধন

বিশ্বদেব নাম রাখেন লক্ষ্মীনারায়ণ,

সত্যভামা নাম রাখে সত্যের সারথি

জাম্ববতী নাম রাখে দেব যোদ্ধাপতি,

বিশ্বামিত্র নাম রাখে সংসারের সার

অহল্যা রাখিল নাম পাষাণ-উদ্ধার।


ভৃগুমুনি নাম রাখে জগতের হরি

পঞ্চমুখে রাম নাম গান ত্রিপুরারি,

কুঞ্জকেশী নাম রাখে বলি সদাচারী

প্রহ্লাদ রাখিল নাম নৃসিংহমুরারী,

বশিষ্ঠ রাখিল নাম মুনি মনোহর

বিশ্বাবসু নাম রাখে নব জলধর,

সম্বতর্ক নাম রাখে গোবর্ধনাধারী

প্রাণপতি নাম রাখে যত ব্রজনারী,

অদিতি রাখিল নাম অরাতিসূদন

গদাধর নাম রাখে যমল-অর্জুন,

মহাযোদ্ধা নাম রাখে ভীম মহাবল

দয়ানিধি নাম রাখে দারিদ্রসকল,

বৃন্দাবনচন্দ্র নাম রাখে বৃন্দাদ্যুতি

বীরজা রাখিল নাম যমুনার পতি,

বাণীপতি নাম রাখে গুরু বৃহস্পতি

লক্ষ্মীপতি নাম রাখে সুমন্ত সারথি।


সন্দীপনি নাম রাখে দেব অন্তর্যামী

পরাশর নাম রাখে ত্রিলোকের স্বামী,

পদ্মযোনি নাম রাখে অনাদির আদি

নটিনারায়ণ নাম রাখে সম্পতি,

হরেকৃষ্ণ নাম রাখে প্রিয় বলরাম

ললিতা রাখিল নাম দুর্বাদলশ্যাম,

বিশাখা রাখিল নাম অনঙ্গমোহন

সুচিত্রা রাখিল নাম শ্রীবংশীবদন,

আয়ান রাখিল নাম ক্রোধনিবারণ

চণ্ডাকেশী নাম রাখে কৃতান্তশাসন,

জ্যোতিষ্ক রাখিল নাম নীলকান্তমণি

গোপীকান্ত নাম রাখে সুদাম-ভরণী,

ভক্তগণ নাম রাখে দেব জগন্নাথ

দুর্বাশা রাখিল নাম অনাথের নাথ,

রাসেশ্বর নাম রাখে যতেক মালিনী

সর্বযজ্ঞেশ্বর নাম রাখেন শিবানী।


উদ্ধব রাখিল নাম মিত্রহিতকারী

অক্রূর রাখিল নাম ভবভয়হারী,

গুঞ্জমালী নাম রাখে নীলপীতবাস

সর্ববিদ্যা নাম রাখে দ্বৈপায়ণ ব্যাস,

অষ্টসখী নাম রাখে ব্রজের ঈশ্বর

সুরলোকে নাম রাখে অখিলের সার,

বৃষভানু নাম রাখে পরম ঈশ্বর

স্বর্গবাসী নাম রাখে দেব পরাৎপর,

পুলন রাখিল নাম অনাথের সখা

রসসিন্ধু নাম রাখে সখী চিত্রলেখা,

চিত্রলোক নাম রাখে অরাতিদমন

পুলস্ত্য রাখিল নাম নয়নরঞ্জন,

কাশ্যপ রাখিল নাম রাস-রাসেশ্বর

ভাণ্ডারিক নাম রাখে পূর্ণ শশধর,

সুমালী রাখিল নাম পুরুষপ্রধান

পুরঞ্জন নাম রাখে ভক্তগনপ্রাণ।


রজকিনী নাম রাখে নন্দের দুলাল

আহ্লাদিনী নাম রাখে ব্রজের গোপাল,

দৈবকী রাখিল নাম নয়নের মণি

জ্যোতিষ্ময় নাম রাখে যাজ্ঞবল্ক মুনি,

অত্রিমণি নাম রাখে কোটি চন্দ্রেশ্বর

গৌতম রাখিল নাম দেব বিশ্বম্ভর,

মরীচি রাখিল নাম অচিন্ত্য-অচ্যুত

জ্ঞানাতীত নাম রাখে সনকাদি সুর,

রুদ্রগণ নাম রাখে দেব চক্রপাণি

বসুগণ নাম রাখে ঠাকুর দয়াল,

সিদ্ধগণ নাম রাখে পুতনা-নাশন

সিদ্ধার্থ রাখিল নাম কপিল কপোধন,

ভাগরী রাখিল নাম অগতির গতি

মৎস্যগন্ধা নাম রাখে ত্রিলোকের পতি,

শুক্রাচার্য নাম রাখে অখিলবান্ধব

বিষ্ণুলোকে নাম রাখে দেব শ্রীমাধব।


যদুগণ নাম রাখে যদুকুলপতি

অশ্বিনীকুমার নাম রাখে সৃষ্টিস্থিতি,

অর্জমা রাখিল নাম কালনিবারণ

সত্যবতী নাম রাখে অজ্ঞাননাশন,

পদ্মাক্ষ রাখিল নাম ভ্রমর-ভ্রমরী

ত্রিভঙ্গ রাখিল নাম যত সহচরী,

বঙ্কচন্দ্র নাম রাখে শ্রীরূপমঞ্জরী

মাধুরী রাখিল নাম গোপী-মনহরী

মঞ্জুমালী নাম রাখে অভীষ্টপূরাণ

কুটিলা রাখিল নাম মদনমোহন,

মঞ্জরী রাখিল নাম কর্মবন্ধনাশ

ব্রজবন্ধু নাম রাখে পূর্ণ-অভিলাষ,

হরেকৃষ্ণ নাম রাখে প্রিয় বলরাম

রাখাল রাজা নাম রাখে ভক্ত শ্রীরাম।


 ==================

★2>জাগো হে এই নগরবাসী

জাগো হে এই নগরবাসী,

মুখে জয় রাধা, শ্রীরাধা বইলা

পোহাইল নিশি।


পূবেতে বন্দনা করি

পূবের দিবাকর,

একদিকে উদয় ভানু

চৌদিকে প্রকাশ।


উত্তরে বন্দনা করি

কৈলাসশিখর,

তার পাছে বন্দনা করি

শিব আর পার্বতী।


দক্ষিণে বন্দনা করি

কালিদয় সাগর,

পাখি হইয়া উড়ে পড়ে

নাহি বালুচর।


পশ্চিমে বন্দনা করি

ঠাকুর জগন্নাথ,

তার পাছে বন্দনা করি

শ্রী গুরুর চরণ।


 ==================

★3>জেনেছি জেনেছি তারা

জেনেছি জেনেছি তারা

তুমি জান ভোজের বাজি,

যে তোমায় যেভাবে ডাকে

তাতে তুমি হও মা রাজি।


মগে বলে ফারা তারা

গড বলে ফিরিঙ্গি যারা,

খোদা বলে ডাকে তোমায়

মোঘল পাঠান সৈয়দ কাজি।


শাক্তে বলে তুমি শক্তি

শিবে তুমি শৈবে আরতি,

শরীর বলে সূর্য্য তুমি

বৈরাগী কয় রাধিকাজী।


গাণপত্য বলে গণেশ

যক্ষ বলে তুমি ধনেশ,

শিল্পী বলে বিশ্বকর্মা

বদর বলে নায়ের মাঝি।


শ্রী রামদুলাল বলে

বাজি নয় এ যেন ফলে,

এক ব্রহ্ম দ্বিধা ভেবে

মন আমার হয়েছে পাজি।


 ==================

★4>ডুব-ডুব-ডুব

ডুব-ডুব-ডুব ডুব সাগরে আমার মন,

তলাতল পাতাল খুঁজলে,

পাবি রে প্রেম রতন ধন।


খোঁজ-খোঁজ-খোঁজ খুঁজলে পাবি

হৃদয়-মাঝে বৃন্দাবন,

দীপ-দীপ-দীপ জ্ঞানের বাতি

জ্বলবে হৃদে অনুক্ষণ।


ড্যাং ড্যাং ড্যাং ড্যাঙায় ডিঙে

চালায় বল সে কোন জন?

কুবীর বলে শোন শোন শোন,

ভাব গুরুর শ্রীচরণ।


 ====================

★5>তোর কোলে লুকায়ে থাকি

তোর কোলে লুকায়ে থাকি

চেয়ে চেয়ে মুখপানে

মা মা বলে ডাকি,

তোর কোলে লুকায়ে থাকি।


ডুবে চিদানন্দরসে

মহাযোগে নিদ্রাবশে,

দেখি রূপ অনিমেষে

নয়নে নয়ন রাখি,

তোর কোলে লুকায়ে থাকি।


দেখে শুনে ভয় করে

প্রাণ কেঁদে ওঠে ডরে,

মাগো রাখো

আমায় বুকে ধরে,

স্নেহে অঞ্চলে ঢাকি,

তোর কোলে লুকায়ে থাকি।


 =====================

★6>তোর পদতলে আছি পড়ে

তোর পদতলে আছি পড়ে

ডাকছি দিবারাত্রি ধরে,

কাঁদছি কেবল মা,মা বলে

ও মা তারা ত্রিনয়নী।


কত দুঃখ আছে ভালে

পাপী-তাপী কত তারালে,

জীবনভরে দুঃখ দিলে

এখনো কি মা শান্তি পেলি।


আশা ভরসা সবই তো মা

তোমার তো মা আছে জানা,

পুরাও না মা মনবাসনা

ধরি মা তোর চরণখানি।


 ===================

★7>তোর মতো মা এত আপন

তোর মতো মা এত আপন

কে আর শ্যামা আমার আছে,

তুই যদি মা মুখ ফিরাবি

যাব তবে কাহার কাছে।


যত ধূলা আমার গায়ে

সেসব মাগো দে মুছায়ে,

কোলে নে মা হাত বাড়ায়ে

রেখে দে তোর বুকের মাঝে।


সুখে-দুঃখে দিনে-রাতে

মা তুই আমার থাকিস সাথে,

স্নেহশীতল কোল দে আমার

তপ্ত পরাণ কেবল যাচে।


যদি যেতে চাই মা দূরে

বাঁধিস আমায় স্নেহের ডোরে,

তোর সোহাগে, তোর প্রেমে মা

তোর জীবনেই থাকব বেঁচে।


 =====================


★8>ত্রিনয়নী দুর্গা,

মা তোর রূপের সীমা পাইনা খুঁজে, ত্রিনয়নী দুর্গা,

চন্দ্র তপন লুটায় মা তোর (মা), চরণতলে দশভুজে।

বন্দনা গায় সরস্বতী, লক্ষ্মী সাজায় সন্ধ্যারতি,

কার্ত্তিকেয় সিদ্ধিদাতা সিদ্ধ যে মা তোমায় পূজে।।


ত্রিকাল যে মা থমকে দাঁড়ায়, রুদ্রাণী তোর চণ্ডীরূপে,

জড়ের বুকে চেতন জাগে (মা), যুগান্তরের অন্ধকূপে।

হিমগিরির সিংহ তোমার, বাহন যে গো শক্তি পূজার,

মরণভয়ে অসুর কাঁপে, পায়ের তলায় চক্ষু বুজে।।


 ====================

★9>দেখা দে মা

বিপদ-ভাবনা রবে না মা

দেখা দে মা শ্মশান কালী।


আমার হৃদয়-জবা দেবো তুলি

মাগো তোমার চরণে অঞ্জলি।


মাগো, তুমি সীতা তুমি সাবিত্রী

তুমি মা জগতপালী।


এলোকেশী মুক্তি দিতে

এসেছে মাগো শিবতত্ত্ব জানাইতে,

বলি, ধ্বংস কর তোর প্রেম-অসিতে,

এই অসীম সরকারের অ-শিব গুলি।

======================

 

★10>দীনবন্ধু কৃপাসিন্ধু

দীনবন্ধু কৃপাসিন্ধু কৃপাবিন্দু বিতর,

মম হৃদি-বৃন্দাবনে কমল-আসনে

প্রাণমন সনে বিহর।


নয়ন মুদি বা চাহিয়া থাকি

অথবা যেদিকে ফিরাই আঁখি,

ভিতরে বাহিরে যেন হে নিরখি

তব রূপ মনোহর।


এই করো হরি দীন-দয়াময়

তুমি আমি যেন দুটি নাহি রয়,

জলের তরঙ্গ জলে করো লয়

চিদঘন শ্যামসুন্দর।


ওই পদে পরিব্রাজকের গতি

যেন ভাগীরথীর সাগর-সংহতি,

জীব শিব দোঁহে অভেদ মুরতি

জীব নদী তুমি সাগর।


 ===================


★11>দুরিতবারিনী


দুরিতবারিনী ও মা হররানী

ডাকিছে কাতরে এ দীন সন্তান,

করিয়া যতন কমল আসন

পেতেছি হৃদয়ে কর অধিষ্ঠান।


শিখাইয়া দাও তুমি মা ভবানী

কেমনে পুজিব চরণ দু’খানি,

ভজন পুজন কিছুই না জানি

তাই ভাবি কিসে পাব পদে স্থান।


ভরসা কেবল করুণা তোমার

তাই এ সন্তান ডাকে বারেবার,

নাশ মা তাহার অজ্ঞান আঁধার

তনয়ে তোমার দাও দিব্যজ্ঞান।


যেন নাহি ভুলি চরণ দু’খানি

এই মতি দাও তনয়ে জননী,

অকূল পাথার কিসে হই পার

ভব দুঃখ যেন হয় অবসান।


 ================


★12>দোষ কারো নয়

দোষ কারো নয় গো মা,

আমি স্বখাত সলিলে ডুবে মরি শ্যামা।


আমার ধর্মাধর্ম হল কোদন্ডস্বরুপ,

পূণ্যক্ষেত্রমাঝে কাটিলাম কূপ-

সে কূপে বেড়িল কালরূপ জল,

কালো মনোরমা, মা।


আমার কি হবে তারিণী, ত্রিগুণধারিণী,

বিগুণ করেছে স্বগুণে,

কিসে এ-বারি নিবারি ভেবে দাশরথির

অনিবার বারি নয়নে।


আমার ছিল বারি কক্ষে, ক্রমে এল বক্ষে,

জীবনে জীবন মা কেমনে হয় রক্ষে,

আছি তোর অপিক্ষে দে মা মূক্তি ভিক্ষে,

কটাক্ষেতে করে পার, মা।

====================


★13>নয়ন তুলে দেখ মা শ্যামা

নয়ন তুলে দেখ মা শ্যামা

একি মা, এ তোর মায়ার খেলা,

মেঘে মেঘে জড়িয়ে আমায়

কাটিয়ে দিলি সারাবেলা।


সন্ধ্যা নিলো ধরাতে ঠাঁই

এখন দেখি পথ নাহি পাই,

তীরে বসে ভাবছি শুধু

পাবো কি মোর পারের ভেলা।


সঞ্চয় মোর যা ছিল মা

পথে গেছে খরচ হয়ে,

দিন কেটেছে মত্ত হয়ে

শুধুই ভুলের বোঝা বয়ে।


বাঁধলি যদি সাগরকূলে

কোন দোষে বল গেলি ভুলে,

কোন পরাণে পাষাণ হয়ে

করিস মোরে অবহেলা।


 ====================

★14>নয়নাভিরাম

নয়নাভিরাম মোর নয়নাভিরাম

এসো রামকৃষ্ণ মোর নয়নাভিরাম,

এসো যশোদা দুলাল তুমি রঘুপতি রাম

এসো নয়নাভিরাম মোর নয়নাভিরাম।


দক্ষিণেশ্বরে তব লীলা কি বা মনোহর

কভু শ্যামা রূপ ধরো, কভু সাজ শংকর,

শ্রীরাধার ভাবে প্রভু কাঁদে তব অন্তর

ধূলায়ে লুটায়ে বলো কোথা নবঘনশ্যাম।


পঞ্চবটীর তীরে জাহ্নবী কিনারায়

যেচে প্রেম বিলাইতে ডাকে ওরে আয় আয়,

ভকত কুসুম যতো আনিলে আপন সাথ

নন্দন কাননে সুন্দর পারিজাত,

সে কুসুমে ভরি সাজি, আপনি পূজারী সাজি

করিলে আপন পূজা, ধরি মুখে নিজ নাম।


 =====================

★15>নেচে নেচে আয় মা শ্যামা

নেচে নেচে আয় মা শ্যামা

আমি মা তোর সঙ্গে যাব,

তোর রাঙা পায়ের সোনার নূপুর

বাজলে ‘পরে শুনতে পাব।


নামটি তোমার অভয়াকালী

ভয় দেখায়ে আর কি করবি,

কালের মুখে দিয়ে কালি

কালে কালী কাল কাটাবো।


ভয় যদি পাই অন্ধকারে

ডাকব শ্যামা মা, মা বলে,

মায়ের কাছে চলে যাব

মা ডাক দিয়ে প্রাণ জুড়াব।


 ==================

★16>পাখি তুই ঠিক বসে থাক

পাখি তুই ঠিক বসে থাক রে

রামকৃষ্ণ নামের মাস্তুলে,

তোর বৃথাই ওড়া নড়া-চড়া

খোঁজ পাবি না অকূলে।


তুই যেদিক যাবি দেখতে পাবি

জলে জলাকার,

নাই যে অন্ত দিক-দিগন্ত

অপার পাথার।

তোর ধরবে ডানা ঘোর যাতনা

পড়বি মহা মুশকিলে


অনন্ত অন-অন্ত যে তার

অন্ত কে করে,

প্রধান গ্রন্থ বেদ-বেদান্ত

গেলো চুপ মেরে,

পুরাণেরা দিশাহারা

সার হলো নাম শেষ কালে।


এ দিকে অবিদ্যা-মায়া

পিশাচী করাল,

মন পাপী রে –

বাকি আছে রূপ রসেরই

মনমোহিনী জাল।

তুই পড়বি ফাঁদে, মরবি কেঁদে,

প্রাণ হারাবি বেহালে।


 ===================

★17>পূজিব তোমারে শ্যামা

পূজিব তোমারে শ্যামা

মানস কুসুমতলে,

সাড়া কি দেবে না শ্যামা

এদিনের নয়নজলে।


ডাকি যদি মা ব’লে, মা

আঁখিতারা পড়ে গ’লে,

মা, তবু কি নীরবে রবে

অবহেলে যাবে চলে।

=====================

 

★18>প্রেম ভরে মন রে গাহ

প্রেম ভরে মন রে গাহ রামকৃষ্ণ নাম

শ্রী রামকৃষ্ণ নাম, শ্রী রামকৃষ্ণ নাম,

শ্রী রামকৃষ্ণ নাম।


অন্তরে যতনে রাখো মন রে গাহ নাম,

দীন কাঙালের ধন রামকৃষ্ণ নাম।


একই বৃন্তে ফুটিলরে রাধাকৃষ্ণশ্যাম

শিবকালী ব্রহ্মাবিষ্ণু শ্যামা সীতারাম।


নাম ব্রহ্ম একই জেনে মন রে গাহ নাম

জনম মরণ সাথী, রামকৃষ্ণ নাম।


 ====================

★19>ফিরে যা কমলাকান্ত

ফিরে যা কমলাকান্ত

চিন্তা কি তোর অন্তরে,

ঘরে আছে তোর মা জননী

রাখবি তারে যতন ক’রে।


আদ্যাশক্তি-স্বরূপিণী

উদরে স্থান দিলেন যিনি,

ঘরে রইল তোর মা জননী

রাখবি তারে যতন ক’রে।


আমি গিয়েছিলাম কাশী-বিশ্বশ্বরে

এই দেহ পতন করিবার তরে,

বাবা বলিলেন স্বপ্নের ঘোরে

যা রে তুই ত্রিবেণীর তীরে।

আমার অধ-অঙ্গ গঙ্গার জলে

অধ-অঙ্গ ত্রিবেণীর কূলে,

ডাকি গঙ্গা-গঙ্গা ব’লে

স্থান দিও মা চরণতলে।


নীলকণ্ঠের মন উৎকণ্ঠ

নীলকণ্ঠকে ঘিরিল কণ্টক,

কৃতান্ত ঘিরেছে তারে

দেখি তারে কেউ রাখতে পারে।


নীলকণ্ঠের মন উৎকণ্ঠ

নীলকণ্ঠকে ঘিরিল কণ্টক,

কহেন এবার শ্রীকণ্ঠ

লাগছে চিন্তা মনে রে।


 =================

★20>ভয়ঙ্করী তোরে কালী

ভয়ঙ্করী তোরে কালী

কে বলে মা তারা,

তোর অভয় চরণ ছুঁয়ে মা গো

ভয় হলো সব হারা।


রুদ্রাণী তোর নাচনকালে

প্রলয় যখন এগিয়ে চলে, মা,

হয় সেই প্রলয়ের অন্তরালে

নূতন ভুবন গড়া।


মায়ামোহে মত্ত হয়ে

জীব যদি রয় ভুলে,

মরণকালে তুই মা তারে

নিস গো কোলে তুলে।


ভবভয়ে ও শঙ্করী, মা

আমি যে মা ভয়ে মরি,

আয় মা হয়ে ভয়ঙ্করী

ভাঙতে পাষাণ কারা।

=================


★21>বড় ধুম লেগেছে

বড় ধুম লেগেছে, হৃদিকমলে,

মজা দেখিছে আমার মন পাগলে।

হতেছে পাগলের মেলা

ক্ষেপাতে ক্ষেপিতে মিলে,

আনন্দেতে সদানন্দে আনন্দময়ী পড়েছে ঢলে।

দেখে অবাক লেগেছে তাক্

ইন্দ্রিয় আর রিপুদলে,

পেয়ে সুযোগ এই গোলযোগ

জ্ঞানের কপাট গেছে খুলে।

প্রেমিক পাগল বলে সকল

তা বলে আমার মন কি টলে,

যার পিতামাতা বদ্ধ পাগল,

ভাল হয় কি তাদের ছেলে?

শোন্ মা তারা, ভূভারহরা,

এই বেলা মা রাখছি ব’লে

যখন ভাসব জলে অন্তকালে,

তনয় ব’লে করিস কোলে।


 ===================

★22>বড়ো হতে চাই না

বড়ো হতে চাই না আমি

ছোট হয়েই রব,

ধুলো-কাদা মেখে, মাগো

তোরই কোলে শোব।


লুকোচুরি খেলার সময়

জিতবি না তুই জানি,

মোর জেতাতেই তোর জয় মা

কি ক’রে তা বুঝি নি,

ঘুমের ঘোরে তোর আদরে

হৃদয় ভ’রে নেব।


ভয় করে মা আজকে যখন

লোকে বড়ো কয়,

বড়ো আমি হয় নি মাগো

তুই জানিস নিশ্চয়ই,

তোর কারণেই সাধ করে, মা

শত জন্ম লব।


 ===================

★23>বারে বারে যে দুখ

বারে বারে যে দুখ দিয়েছ, দিতেছ

তারা দুখ নয় সে দয়া তব,

তুমি চিরদুখহরা।

সন্তান মঙ্গলতরে, ওগো

জননী তাড়না করে,

আমি তাই বহিতেছি শিরে

সুখ-দুঃখেরই পসরা।


 ===================

★24>বিফলে দিন যায়

বিফলে দিন যায় রে বিনে

শ্রীহরির সাধনা বিনে,

অসার-কলুষ সংসারে

সারাৎসার-নাম শুনা বিনে।


বৃথা গুনগুন রবে

কী গুণ গাও সগৌরবে,

নির্গুণে আর কে তারিবে

গুণাতীত গুণবিনে।


 ===============

★25>ভজ গৌরাঙ্গ


ভজ গৌরাঙ্গ, কহ গৌরাঙ্গ

লহ গৌরাঙ্গের নাম রে,

যেই জনা গৌরাঙ্গ ভজে

সে হয় আমার প্রাণ রে।


গৌরাঙ্গ ভজিলে গৌরাঙ্গ জপিলে

হয় দুঃখের অবসান, রে।


গৌরাঙ্গ বলিয়া, দু-বাহু তুলিয়া

নাচিয়া-নাচিয়া বেড়াও রে।


 ======================

★26>ভজ রাধাকৃষ্ণ গোপালকৃষ্ণ

ভজ রাধাকৃষ্ণ গোপালকৃষ্ণ

কৃষ্ণ কৃষ্ণ বলো মুখে

হরিনামে বুক ভরে যায়

অভাব মিটায়, স্বভাব জাগায় মহাসুখে।


হরি দীনবন্ধু চির দীনবন্ধু

জীবের চির সুখেদুখে,

ভজ রে অন্ধ চরণার বিন্দু

দুঃস্থ রয় মায়াবিপাকে।


ভজ মূঢ়মতি তব চিরসাথী

যাহার করুণা লোকে-লোকে,

লীলাময় হরি, এসেছে নদীয়া তরি

রাধার পিরিতি লয়ে বুকে।

==================

★27>ভেবে দেখ মন

ভেবে দেখ মন, কেউ কারো নয়,

মিছে ভ্রম ভূমন্ডলে,

ভুল না দক্ষিণাকালী, বদ্ধ হয়ে মায়া জালে৷


যার জন্য মর ভেবে,

সে কি তোমার সঙ্গে যাবে?

সেই প্রেয়সী দেবে ছড়া,

অমঙ্গল হবে বলে।


দিন দুই-তিনের জন্য ভবে,

কত্তা বলে সবাই মানে,

সেই কত্তারে দেবে ফেলে,

কালাকালের কত্তা এলে।


 ===================

★28>মন চল নিজ নিকেতনে

মন চল নিজ নিকেতনে,

সংসার বিদেশে, বিদেশীর বেশে,

ভ্রম কেন অকারণে?

মন চলো নিজ নিকেতনে।


বিষয়-পঞ্চক আর ভূতগণ,

সব তোর পর কেহ নয় আপন-

পরপ্রেমে কেন হয়ে অচেতন,

ভুলিছ আপনজনে?


সত্যপথে মন কর আরোহণ

প্রেমের আলো জ্বালি চল অনুক্ষণ,

সঙ্গেতে সম্বল রাখ পুণ্যধন

গোপনে অতি যতনে।


লোভ-মোহ-আদি পথে দস্যুগণ,

পথিকের করে সর্বস্ব হরণ,

পরম যতনে রাখ রে প্রহরী,

শম, দম দুইজনে।


সাধুসঙ্গ নামে আছে পান্থধাম,

শ্রান্ত হলে তথায় করিবে বিশ্রাম,

পথভ্রান্ত হলে শুধাইবে পথ

সে পান্থনিবাসী গণে।


যদি দেখ পথে ভয়েরই আকার

প্রাণপণে দিও দোহাই রাজার,

সে পথে রাজার প্রবল প্রতাপ,

শমণ ডরে যার শাসনে।


 ===================

★29>মনের বাসনা শ্যামা

মনের বাসনা শ্যামা,

ওরে শবাসনা শোনো মা বলি,

আমার অন্তিমকালে জিহ্বা যেন

বলতে পারে মা কালী কালী,

হৃদয়মাঝে তখন উদয় হয়ো মা

আমায় করবে যখন অন্তর্জলি।

তখন আমি মনে মনে

তুলবো জবা বনে বনে,

মিশাইয়ে ভক্তিচন্দনে

আমি পায়ে দেবো পুষ্পাঞ্জলি।


অর্ধ-অঙ্গ গঙ্গাজলে

অর্ধ-অঙ্গ থাকবে স্থলে,

আর কেহ বা লিখিবে ভালে

কালী কালী নামাবলী,

আর কেহ বা কর্ণকুহরে

বলবে হরি উচ্চৈস্বরে,

আর কেহ বলবে হরে হরে

তার দুই করে দিয়ে তালি।


 ===================

★30>মরিব মরিব সখী

মরিব মরিব সখী, নিশ্চয় মরিব

কানু হেন গুণনিধি কারে দিয়ে যাব।

আমার সময় হয়েছে, তাই বুঝি

আর তো প্রাণে বাঁচবো না সই,

কৃষ্ণ হারা অভাগিনী

আর তো প্রাণে বাঁচবো না সই,

এখন বুঝি সময় হয়েছে।


তোমরা যতেক সখী থেকো মোর সঙ্গে,

সখী হে, সখী আমার,

মরণকালে কৃষ্ণনাম লিখে দিও অঙ্গে।

দেহভরে কৃষ্ণনাম লিখিও,

আমি পরজনমে কৃষ্ণ আবার পাব

নামের সনে প্রাণ গেলে,

দেহভরে কৃষ্ণনাম লিখিও।


ললিতা প্রাণের সখী মন্ত্র দিও কানে

মরা দেহ পোড়ে যেন কৃষ্ণনাম শুনে।

আমি মরতে পারি গো

ওগো কৃষ্ণনাম শুনি যেন,

এই বাসনা আমার মনে

ওগো কৃষ্ণনাম শুনে যেন মরতে পারি গো।


না পুড়ায়ো রাধা অঙ্গ, না ভাসায়ো জলে,

মরিলে তুলিয়া রেখো তমালেরই ডালে।

তমাল ডালে বেঁধে রেখো

কৃষ্ণ কালো, তমাল কালো,

তাইতে তমাল বাসি ভালো।


তব হুঁশ পিয়া যদি আসে বৃন্দাবনে

পরাণ পাবো গো আমি পিয়া-দরশনে।

ভন হে বিদ্যাপতি, শুন বরনারী

ধৈরজ ধরোহ চিতে নীল-অব মুরারি,

আসবে মাধব দু-একদিনে আসবে মাধব

তোমায় ছেড়ে সে রইতে নারে,

ধৈর্য ধরো ওগো রাধে।


 ===================


★31>মা আছেন আর আমি আছি

মা আছেন আর আমি আছি

ভাবনা কি আছে আমার,

মায়ের হাতে খাই, পরি

মা নিয়েছেন আমার ভার।


প’ড়ে সংসার পাকে, ঘোর বিপাকে

যখন দেখি অন্ধকার ,

সেই ঘোর আঁধারে মা আমারে

বাণী শোনায় বারে বার।


এই ছয়জনাতে একইসাথে

পথ ভুলাই যে বারেবার,

সে বিপথ হতে, ধ’রে হাতে

মা যে করিছেন উদ্ধার।


আমি ভুলেও থাকি তবুও দেখি

ভোলেন না মা একটি বার,

এমন স্নেহের আধার কে আছে আর,

মা যে আমার আমি যে মা’র।


===============

★32>মা মা বলে ডাকি

মা, মা বলে ডাকি কালী, কালী

জগন্মাতা জগজ্জন-মনমোহিনী,

মুরতি কোথায় লুকালি।


ভ্রূকুটি হেরি ভয় লাগে পরাণে, মা

নয়ন মুদিয়া আছে নেহারি নয়নে,

মা হয়ে জননী অধম সন্তানে

এ ভয় কেন বা দেখালি।


 =================__

★33>মাগো আনন্দময়ী


মাগো আনন্দময়ী, নিরানন্দ কোরো না

তোমার ওদুটি চরণ বীণে আমার মন

অন্য কিছু আর জানে না,

মাগো আনন্দময়ী, নিরানন্দ কোরো না।


ভবানী বলিয়ে ভবে যাবো চলে

মনে ছিল এই বাসনা,

অকূল পাথারে ডুবাবে আমারে

স্বপ্নেও তা তো জানিনা,

মাগো আনন্দময়ী, নিরানন্দ কোরো না।


অহর্নিশি শ্রীদুর্গা নামে ভাসি

দুঃখরাশি তবু গেলো না,

আমি যদি ম’রি ও হর-সুন্দরী

দুর্গানাম তো কেউ ল’বে না,

মাগো আনন্দময়ী, নিরানন্দ কোরো না।


 ================

★34>মাধব হে

মাধব হে,

বান্ধব হে, এসো মম অন্তরদ্বারে।


তোমার মুরলী সুর,

একবার তেমনি ক’রে

বাজাও চিরমধুর,

ওগো নব-নব রাগে

মনোবীণাতারে।


আপন বাঁধনে, হায়,

রহে যে বাঁধা, মাধব

তবুও ভুলাও তারে,

কেন মোহভারে।

আমি বাঁধা থাকলেও তুমি কেন

থাকতে দাও না,

জানি না কি অপরাধে, মাধব

দূরে সরে থাকো, মাধব হে,

শোনো না আকুল হয়ে

ডাকি বারে-বারে।


যদি না জ্বালাও প্রাণে প্রদীপখানি, মাধব,

আমার এ আঁধার ঘরে

আর কে আলো জ্বালাবে, মাধব,

আলো জ্বেলে দাও, অন্ধকারকে দূরে সরিয়ে দাও

দয়া করে।


যদি না জ্বালাও প্রাণে প্রদীপখানি,

জীবনের বেলা যাবে গগন আঁধারে, হে মাধব

স্মরণ মাগি প্রভু দাও দরশন দাও,

নাও দয়া করে তোমার চরণে,

চরণে তোমার চাই বিলাতে আমারে।


 ====================

★35>মায়ের পায়ের জবা হয়ে

মায়ের পায়ের জবা হয়ে

ওঠ না ফুটে মন,

তার গন্ধ না থাক

যা আছে সে নয় রে

ভুয়ো আবরণ,

আমার মায়ের পায়ের জবা হয়ে

ওঠনা ফুটে মন।


জানি জুঁই মালতী হায়

কত গন্ধ যে ছড়ায়,

তবু ঘরের ফেলে পরের কাছে

নিজেরে বিলায়।

ওরে তোর মতো যে নেই কো তাদের

মায়েপোয়ে আলাপন,

মায়ের পায়ের জবা হয়ে

ওঠ না ফুটে মন।


আমার তাই তো লাগে ভয়

প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে

হই বুঝি বা ক্ষয়।

ওরে যেন ভুলিস না

তোর দয়াময়ী মা,

তার রক্তমাখা কালোরূপে

ঘোচায় কালিমা।

ও মন তাই বলি আয়

ঐ রাঙা পায় করি আত্মসমর্পণ,

মায়ের পায়ের জবা হয়ে

ওঠ না ফুটে মন।


 =================


★36>যখন দুচোখ ভ’রে

যখন দুচোখ ভ’রে নামবে আঁধার

তখন যখন যেন দেখি মাকে,

আমার সকল কথা বন্ধ হলেও

মাতৃনামটি যেন থাকে।


জন্ম-জন্ম সাধ যে আমার

মায়ের কোলে আসি আবার,

আমার কর্মফলের শেষে যেন

কোল বাড়িয়ে আবার ডাকে।


জীবন হাতে সওদা ক’রে

আমি শুধু চোখের জল কিনেছি,

আদর পেয়ে ভুলেছি তাই

মার খেয়ে যে মা চিনেছি।


আমার দেহ হবে অবশ যখন

ফেলে যাব জীর্ণ বসন,

তখন এ প্রাণ যেন ফুলের মতন

মায়ের চরণ সাজিয়ে রাখে।


 =====================

★37>মুরলী বাজে

আজি মুরলী বাজে প্রেম-বৃন্দাবনে,

নব অনুরাগিনী শ্যাম-সোহাগিনী

অভিসারে চলে রাধা কুঞ্জবনে।


মধুঋতু বসন্তে কহে ব্রজনারী

হে প্রিয়-সুন্দর হে গিরিধারী,

দাও প্রিয় দরশন অন্তরে অনুক্ষণ

রাধার জীবনসখা মধুমিলনে।


কোকিল কুহু-কুহু গাহে তরুশাখে

মিলনে চলে রাধা মুখ-শশী ঢাকে,

সুরভিত বনতলে ফুল্লকুসুমদলে

মোহিত অলিকুল গুঞ্জরণে।


 ===================

★38>যতনে হৃদয়ে রেখো

যতনে হৃদয়ে রেখো

আদরিণী শ্যামা মা কে,

মন তুই দেখ আর আমি দেখি

আর যেন কেউ নাহি দেখে।


কুরুচি কুমন্ত্রী যত

নিকট হতে দিও নাকো,

জ্ঞাননয়নকে প্রহরী রেখো

সে যেন সাবধানে থাকে।


কামাদিরে দিয়ে ফাঁকি

আয় মন বিরলে দেখি,

রসনারে সঙ্গে রাখি

সে যেন মা বলে ডাকে।


 ======================

★39>যদি ডাকার মতো পারিতাম ডাকতে

যদি ডাকার মতো পারিতাম ডাকতে,

হায় রে! তবে কি মা এমন করে,

তুমি লুকিয়ে থাকতে পারতে ?


আমি নাম জানিনে ডাক জানিনে

আবার জানিনে মা কোন কথা বলতে।

আমি ডেকে দেখা পাইনে তাইতে

আমার জনম গেল কাঁদতে।


দুখ পেলে মা তোমায় ডাকি

আবার সুখ পেলে

চুপ করে থাকি ডাকতে।

তুমি মনে বসে মন দেখো মা

আমায় দেখা দাও না তাইতে।


ডাকার মতো ডাকা শেখাও

না হয় দয়া করে দেখা দাও আমাকে।

আমি তোমার খাই মা তোমার পরি

কেবল ভুলে যাই নাম করতে।


কাঙাল যদি ছেলের মত

তোমার ছেলে হত তবে জানতে পারতে।

কাঙাল জোর করে কোল কেড়ে নিত,

নাহি সরতে বললে সরতে।


 ===================

★40>যে কটা দিন

যে কটা দিন আছ বেঁচে ওরে মন

হরিনাম নিতে যেন ভুলো না,

ভুলে কেন রইলে, দুকূল হারালে

সঙ্গে কোনোকিছু যাবে না।


মাতাপিতা পরিবার, দারাসূত সহোদর

আপন-আপন মিছে ভাবনা,

ছেলেমেয়ে সংসার, সকলই অসার

কাজেতে কেউ তো আসবে না।


একলা এসেছ একলা যেতে হবে

সঙ্গে তো কেউ যাবে না,

বাল্যকালে খেলা করে কাটালে

যৌবনে কামিনী ছাড়লে না।


বুড়ো হয়েও তবু টাকা-টাকা-টাকা

টাকা-বুলি তোমার ঘুচলো না,

তাই বলি ওরে মন, সংসার-বন্ধন

হরিনাম খড়্গে কাটো না।


 =======================


★41>রঙ দিও না শ্যাম

রঙ দিও না শ্যাম, মিনতি তোমায়,

আবির দিও না প্রভু, ধরি দুটি পায়।


লাল-রঙিন জলে, শ্যাম হে

আমার বসন ভিজায়ে গেলে,

দেখা হ’লে পরিজনে

ওগো শ্যাম দুষিবে আমায়।


মিটাইতে মন-আশ

ছুটে আশি তব পাশ,

গৃহকাজ ফেলে রেখে

আসি যমুনায়।


শ্যাম হে, ওহে নিঠুর শ্যাম

তুমি তো জানো না,

আমাদের ঘর ভালো না

যে ঘরে বসত করি,

তারা কৃষ্ণের অঙ্গের বাতাসও

নিতে চায় না,

আর তুমি যখন-তখন ডাকো,

তারপরে এই রঙ নিয়ে

কি করে যাব শ্যাম।


ওগো নাগর, তোমার বাঁশির গানে

যে রঙ লেগেছে প্রাণে,

ওগো স্মৃতি-পিচকারি মোরে

আজ সে রঙে রাঙায়।


 

================

★42>রাই জাগো গো

রাই জাগো গো,

জাগো শ্যামের মনমোহিনী বিনোদিনী রাই

জেগে দেখো আর তো নিশি নাই, গো জয় রাধে।


শ্যাম-অঙ্গে অঙ্গ দিয়া

আছো রাধে ঘুমাইয়া,

কুলকলঙ্কের ভয় কি তোমার নাই, গো জয় রাধে।


আমি তোমার সেবার দাসী

যুগল-চরণ ভালোবাসি গো,

যুগল-বিনে অন্য আশা নাই, গো জয় রাধে।


 ================

★43>শ্যামা নামের লাগল আগুন

শ্যামা নামের লাগল আগুন

আমার দেহ-ধূপকাঠিতে।

যত জ্বালি সুবাস তত

ছড়িয়ে পরে চারিভিতে, মা –

শ্যামা নামের লাগল আগুন

আমার দেহ-ধূপকাঠিতে।


ভক্তি আমার ধূপের মতো

ঊর্ধে ওঠে অবিরত, মা,

শিবলোকের দেবদেউলে

মা’র শ্রীচরণ পরশিতে, মা –

শ্যামা নামের লাগল আগুন

আমার দেহ-ধূপকাঠিতে।


অন্তরলোক শুদ্ধ হলো

পবিত্র সেই ধূপ-সুবাসে,

ওরে, মা’র হাসিমুখ চিত্তে ভাসে

চন্দ্রসম নীল আকাশে।

সবকিছু মোর পুড়ে কবে, মা –

চিরতরে ভস্ম হবে,

মা’র ললাটে আঁকবো তিলক

সেই ভস্ম বিভূতিতে, মা –

শ্যামা নামের লাগল আগুন

আমার দেহ-ধূপকাঠিতে।


 ==================


★44>শ্যামা মন-ছাঁচে তোমাকে ফেলে

শ্যামা, মন-ছাঁচে তোমাকে ফেলে

মনোময়ী মূর্তি আজ ল’ব তুলে।।


মন যে আমার খাদে ভরা

তোমার ভাবে কৈ মা গলে?

ভাবরূপিনী হও তারিণী

গলে আমার ভাব-অনলে!


দেখিব রূপ তোমার স্বরূপ

যে রূপেতে ভোলা ভোলে

পুরাও আশা কৃত্তিবাসা

দিয়ে দেখা হৃদিকমলে।।


গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা

কি হবে মা বনফুলে?

কি দিয়ে পূজিব তোমায়

ভাবছি বসে তাই বিরলে।।


আমি আমার নই জননী

আমার নাই কিছুই ভূতলে।

এ ব্রহ্মাণ্ড তোমার সৃষ্টি

দৃষ্টিহীনে আমার বলে।।


প্রেমিক বলে শোনরে যুক্তি

যথাশক্তি ভক্তিজলে

ধুয়ে দে মা’র রাঙা চরণ

মন-ফুল দে পদতলে।।


 ================

★45>শিব, শিব, মহাশিব

শিব, শিব, মহাশিব, শিব রামকৃষ্ণ নাম,

ব্রহ্মা, বিষ্ণু, সর্বদেব রামকৃষ্ণ দীপ্তনাম৷

কার্তিকেয়, গণপতি, বিশ্বকর্মা, বিশ্বমান,

যুগদেব রামকৃষ্ণ, রামকৃষ্ণ ব্রহ্মনাম৷৷


ধর্মকর্ম, লক্ষ্মী, যোগী, মহাদেবী, মহেশ্বর,

মোক্ষ, ক্ষেম, সর্বদেবদেবী শ্রীযোগীশ্বর৷

দুর্গা, শিবা, সত্য, শ্রেষ্ঠ, শ্রেয়-শ্রেয়াধীশ্বর,

জ্ঞানীস্থুল, মহাশুন্য রামকৃষ্ণ বোধীশ্বর৷৷


কালাকাল, মহাকাল, কালী, শ্যামা, নিত্যকাল,

সত্যাসত্য, পরমসত্য, দেব শ্রীমহেষ্বাস৷

শঙ্খ-চক্র-গদা-পদ্মধারী শ্রীনারায়ণ,

আদিদেব রামকৃষ্ণ সর্বদেবাধীশ্বর৷৷


বিশ্বপতি, লক্ষ্মীপতি, প্রজাপতি, মানেশ্বর,

শীতলা, বিমলা, স্নিগ্ধা, সারদা শ্রীধীশ্বর৷

সর্বদেবদেবীরূপ, সর্বসিদ্ধিপরায়ণ,

রামকৃষ্ণ পরব্রহ্ম, নিত্যানিত্য সোমেশ্বর৷৷


রূপারূপ, সীমাসীম, লীলা-নিত্য, সুরেশ্বর,

অর্থানর্থ, মহাদেব, সত্যদেব, ভূতেশ্বর৷

নিদ্রা, লজ্জা, শ্রদ্ধা, স্তুতি, যজ্ঞ, কর্ম, বিদ্যা, মান,

নিত্য-সত্য রামকৃষ্ণ একমেবাদ্বিতীয়ম্৷৷


অবতারশ্রেষ্ঠ যোগী, নিত্য যোগ-সংস্থিত,

সর্বমোহমুক্ত, শুদ্ধ, সত্য, প্রেম, ধী-স্থিত৷

তর্ক-যুক্তি-ঊধর্ব-মুক্ত, বুদ্ধ, জিত-ইন্দ্রিয়,

কামিনী-কাঞ্চনজিত, নির্বিকার মহেশ্বর৷৷


পতিতপাবন দেব, সারদা শ্রীপ্রাণনাথ,

জগতপিতা শ্রীমান, অধমে অভয়স্থান৷

রক্ষা, দীক্ষা, সর্বদাতা, সর্বজীব অভিপ্রেত,

নির্বিকল্পে চিত্তস্থিত ব্রহ্মলোকাধিশ্বর৷৷


দরশনে নিত্যধ্যান, মননে মুক্তিলাভ,

স্মরণে জনমশুদ্ধ, নির্ভরে অমিয়লাভ৷

যুগলে অভিন্ন-হৃদি রামকৃষ্ণ-সারদা,

প্রেমযোগে, মুক্তি, মোক্ষে ধন্য শ্রীবসুন্ধরা৷


 =====================

★46>সকলি তোমারি ইচ্ছা

সকলি তোমারি ইচ্ছা,

ইচ্ছাময়ী তারা তুমি

তোমার কর্ম তুমি করো মা,

লোকে বলে করি আমি।


পঙ্কে বদ্ধ কর করি,

পঙ্গুরে লঙ্ঘাও গিরি

কারে দাও মা ব্রহ্মপদ,

কারে করো অধগামী।


আমি যন্ত্র, তুমি যন্ত্রী

আমি ঘর, তুমি ঘরণী

আমি রথ, তুমি রথী

যেমন চালাও তেমনি চলি।


 ==================

★47>সখাসঙ্গে খেলা করে

সখাসঙ্গে খেলা করে নীলকান্তমণি

আমার গোপাল গুণমণি।


মায়ে সাজায় মনের মতো

গোপালে যেমন তেমনোতো,

মা নিজেই সাজায়, নিজেই দেখে

গোপালের চাঁদবদনখানি,

লীলা করে গোপাল গুণমণি।


শিশু গোপাল শিশু কার,

সোনার নূপুর বাজে চরণে

রুনুঝুনুঝুনু তার।

ভূমি মাটি মুখে পুরি

ভোজন করে আনন্দে হরি,

যশমাতা নেয়, তারই মুখে

দেখায় চতুৰ্দশভুবন,

লীলা করে গোপালরতন।


আর, রাঙা পায়ে হাঁটি যায়

ক্ষণে গড়াগড়ি খায়,

তুলিয়া মা বদন মুছায়

দুটি নয়নধারা বয় ধারার কোনে,

লীলা করে গোপাল গুণমণি।


দেখিয়া গোপালের রূপ

গোপীদের উথলি উঠে প্রেমকূপ,

প্রেমের ধারায় ভাবে সবের নয়নে নয়নে।

বৃন্দাবনের কৃষ্ণলীলা

কামগন্ধ নাহি আইলা,

সখাসখী সঙ্গে লীলা দেখো হে নয়নে,

লীলা করে গোপাল গুণমণি।


অনামী কয় দেখ না কেনে

তা না হ’লে বা হবে কেনে,

ভক্তবাঞ্ছাপূরণকারী এলেন ধরাধামে।

দেখবি রে আয়,

গোপাল করে লীলা এই মধুর বৃন্দাবনে

সখাসঙ্গে ভাবতরঙ্গে,

খেলে গোপাল পরম রঙ্গে

ভাবতে যমুনা বয় প্রেমেরই উদার।

ওরে দেখবি তো দেখবি আয়,

গোপাল লীলা দেখবি আয়।


 ======================

★48>সখী লোকে বলে কালো

ও, সখী লোকে বলে কালো

কালো নয় সে যে,

আমারি চোখেরই আলো।


বঁধু কালো তাই, কাজল লেখায়

নয়ন করেছি কালো।

রূপ দেখবো বলে,

সেই কালো রূপ দেখবো বলে

ওগো, আমার বঁধুর সেই কালো রূপ

পরাণ ভরে দেখবো বলে,

সেই কালো রূপ ছাড়া

আমি রূপ আর দেখবো না।

কালো দেখবো বলে

নয়ন করেছি কালো।


সে যে আমার হৃদয় রাজা,

আমি প্রেমের আসনে বসাইয়ে

তারে দিব গো প্রেমের সাজা।

তারে সাজা দেবো গো,

সখী প্রেম করে তারে

সাজা দেবো গো।

সেই প্রেমের ঠাকুর,

প্রেমিক নাগর বুঝবে যবে

সাজা দেবো গো,

দিব গো প্রেমের সাজা।।


কালো কেশজালে দুলাব চামর,

জুড়াবে শ্যামল হরি

আমি নয়নে রেখেছি

প্রেমের সাগর।

চরণ ধোয়াবো ওর

চরণ ধুইয়ে দেবো,

ঐ চরণকমল ধুইয়ে দেবো।

বলবো এসো এসো বন্ধু আমার

ঐ চরণকমল ধুইয়ে দেবো,

আমার প্রেম সাগরের সলিল দিয়ে

চরণকমল ধুইয়ে দেবো,

চরণ ধোয়াবো মরি।


আমি দেহের দেউলে

আরতি করিব,

সখী দেহের দেউলে

আরতি করিব,

জ্বালায়ে প্রেমের ধূপে।

আবার বলিব হে নাথ,

বিকানু আমারে

ও চরণে চুপে চুপে।

বিকিয়ে দিলাম,

ঐ চরণে বিকিয়ে দিলাম

ওগো আমায় আমি

বিকিয়ে দিলাম।

আমার দেহের আরতি প্রণতি করি

আমায় আমি বিকিয়ে দিলাম,

ও চরণে চুপে চুপে।


 ===================

★49>সময় তো থাকবে না

সময় তো থাকবে না গো মা

কেবলমাত্র কথা রবে মা।


কথা রবে, কথা রবে মা,

জগতে কলঙ্ক রবে,

সময়তো থাকবে না গো মা

কেবল মাত্র কথা রবে মা ।


ভালো কি বা মন্দ কালী

অবশ্য এক দাঁড়াইবে,

সাগরে যার বিছানা মা

শিশিরে তার কি করিবে।


দু:খে-দু:খে জরজর,

আর কত মা দু:খ দিবে,

মা, কেবল মাত্র দুর্গা নাম

শ্যামা নামে কলঙ্ক রটিবে।


কথা রবে, কথা রবে মা,

জগতে কলঙ্ক রবে।


 

====================

★50>হরি হে

হরি হে,এই কি তুমি,

সেই আমার হৃদয়বিহারী।।

যারে পাবার আশে ঘুরে ঘুরে

ধরি ধরি আর ধরতে নারি।।


কে জানে এই আকুল প্রানে,

কে জানে এই দু’নয়নে

কে জানে এই আঁখি নীরে

আছ হে হরি।

তোমার হৃদে ধরে পরশ করে

কই কই বলে কেঁদে মরি।।


জানি কি এই মলিন পথে,

জানি কি মোর সাথে সাথে

জানি কি এই হাটে মাঠে

আছ হে হরি।

জানি কি রূপ সাগরে

অরূপ রতন

আছ নানা রূপ ধরি।


‘আমি’ ‘আমি’ করে বেড়াই,

তাই তোমারে দেখতে না পাই,

বিনে আমার ‘আমি’র মোহ

আজ সাঙ্গ করি,

আজ আমি তোমায় হলেম হারা,

আর কি তোমায় হারাতে পারি।


 

হৃদি-বৃন্দাবনে বাস

হৃদি-বৃন্দাবনে বাস

যদি করো কমলা-পতী,

ওহে ভক্তি-প্রিয় আমার

ভক্তি হবে রাধা সতী।


মুক্তি কামনা আমারি

হবে বৃন্দে গোপনারী,

দেহ হবে নন্দের পুরী

স্নেহ হবে মা যশমতী।


আমায় ধরো জনার্দন

পাপভার গোবর্ধন,

কামাদি ছয় কংস-চরে

ধ্বংস করো সম্প্রতি।


বাজায়ে কৃপা বাঁশরী

মন-ধেনুকে বশ ক’রি,

তিষ্ঠ হৃদি-গোষ্ঠে আমার

পুরাও ইষ্ট এই মিনতি।


প্রেমরূপ যমুনাকূলে

আশা-বংশী বটমূলে,

স্ব-দাস ভেবে সদয় ভাবে

সতত করো বসতি।


যদি বলো রাখাল প্রেমে

বন্দী থাকি ব্রজধামে,

জ্ঞানহীন রাখাল তোমার

দাস হবে হে দাশরথী।

=======================


No comments:

Post a Comment