23>শিব কে?;--+ইষ্টের ধ্যান ||
==================
1>শিব কে?;--
প্রথমে জানবো শিব শব্দের অর্থ , শিব শব্দের শাব্দিক অর্থ হচ্ছে কল্যাণকারী বা মঙ্গল। ভগবান শিবের পাঁচটি মুখ রয়েছে , এই পাঁচ মুখ দিয়ে তিনি জগতের মঙ্গল করে থাকেন , তাই তিনি কল্যাণকারী বা শিব নামে পরিচিত।
পাঁচ মুখ যথাক্রমে বামদেব , কালাগ্নি , দক্ষিনেশ্বর , ঈশান এবং কল্যাণ সুন্দরম্। আবার কোথাও একে ঈশান , তৎপুরুষ , অঘোর , বামদেব এবং সদ্যোজাত নামেও উল্লেখিত হয়েছে। শিবের দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে চিত্তিশক্তি যা সকল প্রকার বন্ধন থেকে মুক্ত। শিবের তৃতীয় অর্থ সদাশিব।
ব্রহ্মের সাকার এবং সগুণ রুপকে বলা হয় সদাশিব । তিনি আনুমানিক সাত হাজার বছর পূর্বে অবতরিত হয়েছেন । পরব্রহ্মের নানা শক্তির নানা অভিব্যাক্তিকে বলা হয়েছে দেবতা কিন্তু শিব এইসব দেবতাদেরও দেবতা । তাই তার এক নাম মহাদেব । যাকে পরব্রহ্ম বলা হয়েছে যিনি নিরাকার এবং নির্গুণ তিনিই ' শিব ' নামে বিখ্যাত । যা সৃষ্টির মূলতত্ত্ব তাই শিবতত্ত্ব । বিভিন্ন শাস্ত্রে একমাত্র শিবকেই ' ঈশ্বর ' রূপে মানা হয়েছে । ভগবান শিবই এই সম্পূর্ণ সৃষ্টির অনাদি দেব । যার মহিমা বেদ , পুরাণ , দর্শন , যোগ , তন্ত্র ইত্যাদি সাহিত্যে সর্বত্র বর্ণিত হয়েছে।
ভারতের জন মানস যতটুকু বৈষ্ণব ধর্মে প্রভাবিত তার থেকে অনেক বেশি প্রভাবিত শৈবধর্মে। ভগবান শিব যোগী , ভক্ত , তান্ত্রিক , বেদান্তি , কর্মকাণ্ডী , উপাসক এবং দার্শনিক সকলের কাছে পূজনীয়। তিনিই জ্ঞান , কর্ম এবং ভক্তির আদি দেবতা । তিনিই পরমপুরুষ পরমব্রহ্ম । শিব এবং শক্তি মিলেই ব্রহ্ম তাই শিবকে ' অর্দ্ধনারীশ্বর ' বলা হয় ।
তার দক্ষিণ অঙ্গ শিব স্বরূপ এবং বাম অঙ্গ শক্তিরূপ । মহাভারতে শ্রীকৃষ্ণ পরমেশ্বর শিবের স্তুতি করেছেন । মহাভারতের অনুশাসন পর্বে ( 15/11 ) লিখিত হয়েছে --- শিবের সমান দেব নেই , শিবের সমান গতি নেই , শিবের সমান দাতা নেই , শিবের সমান বীর নেই।
আসলে শিব কে ? শিবের পরিচয় কি ? এর যথার্থ বর্ণনার শেষ নেই , এর আদি অন্ত নেই।
ওঁ নমঃ শিবায়।
আদ্যনাথ রায় চোধুরী।
========================
2>ইষ্টের ধ্যান করার নিয়ম::--
স্বামী বলভদ্রানন্দ।
গুরুদেবের দেওয়া মহামন্ত্র জপ করার সঙ্গে সঙ্গে হৃদয়ে ইষ্টমূর্তির ধ্যান করুন।আমাদের ধ্যান করার পদ্ধতি যেটা রামকৃষ্ণ রামকৃষ্ণ মিশনে শেখানো হয় সর্বত্রই---সেই পদ্ধতিতে।
*পদ্ধতিটি হচ্ছে "আপনি যেদিকে মুখ করে বসে আছেন, ভাববেন আপনার গুরু ও ইষ্ট সেই দিকেই চেয়ে আছেন।"*
পকেটে ঠাকুরের ছবি রাখেন তো? সেই ছবিটি যদি হৃদয়ে রাখেন তাহলে দেখা যাচ্ছে আপনি যেদিকে মুখ করে বসে আছেন আপনারা হৃদয়ে ইষ্টের ছবিটির মুখও একই দিকে।
*"ঠাকুর বলেছেন হৃদয় ডঙ্কমারা জায়গা।* অতত্রব হৃদয়েই ধ্যান করতে হবে।
ইষ্ঠের ছবি আমরা সামনাসামনিই দেখতে অভ্যস্থ।
*ইষ্টের মুখ ও সাধকের মুখ একই দিকে---এই পদ্ধতিতে যেহেতু দেখতে আমরা অভ্যস্থ নই সেহেতু প্রথম প্রথম অসুবিধা হবে।নিত্য অভ্যাসের ফলে এই পদ্ধতিটি আয়ত্ব করা সম্ভব।*
কথা হচ্ছে আমরা এভাবে ভাববো কেন?আপনি যদি চোখ বন্ধ করে এই পদ্ধতিতে ইষ্টকে হৃদয়ে দেখার চেষ্টা করেন, তাহলে আপনাকে automatically শরীরের বাইরে গিয়ে দেখতে হবে।
*এই বাইরে গিয়ে ইষ্টকে ধ্যানে হৃদয়ে দেখার চেষ্টাটিতে যদি আপনি নিত্য অভ্যাসের ফলে প্রতিষ্ঠিত হন,তাহলে আপনার ধীরে ধীরে শরীর্ত বোধটি কেটে যাবে*।
*প্রকৃত পক্ষে আমি যে ব্রহ্ম এটা বুঝতে হবে ,অনুভব করতে হবে। কাজেই শরীরের বাইরে এ বোধটাকে নিয়ে যেতেই হবে।*
( সংগ্রহ)
আদ্যনাথ রায় চৌধুরী।
=======================
No comments:
Post a Comment