41>|| দুর্বা ঘাস::--||
দুর্বা ঘাস অতি পবিত্র কেন এবং সকল দেবতার পূজায় লাগে কেন ?
পথে, ঘাটে, মাঠে সকলের পায়ের নিচে থাকে, সকলেই পাড়িয়ে চলে,তথাপি দূর্বা ঘাস অতি পবিত্র। সকল পূজায় লাগে।
সকল দেবতাই দূর্বা ঘাসে তুষ্ট।
কারন খুঁজতে গিয়ে পেলাম
সাধারণ এক ঘাস, অথচ তাকে ছাড়া যে কোনও পুজোই অসম্ভব বলা চলে। সঙ্কল্প করা থেকে আরম্ভ করে যজ্ঞাহুতি, সব কাজেই প্রয়োজন হয় দূর্বার। আবার পার্বতীপুত্র গণেশের ভীষণ প্রিয় এই ঘাস।
আসলে কিন্তু এই দূর্বা ঘাস এক অসুর।
দূর্বা এক অসুরের নাম অথচ অসুর হয়েও দেবপুজোয় অতি আবশ্যক হয়ে ওঠার কাহিনী, অতি সুন্দর সেই কাহিনী,
আমাদের সকল শুভ কর্ম, যে কোনও পবিত্র অনুষ্ঠানে ও পূজা পার্বনে অতি প্রয়োজনীয় সরু ও তীক্ষ্ণ ডগা বিশিষ্ট এই বিশেষ ঘাস।
কাউকে আশীর্বাদ করার জন্যও ব্যবহৃত হয় ধান ও দূর্বা। কিন্তু হিন্দুদের পুজোয় এই ঘাসের এত প্রয়োজন কেন, তা নিয়ে প্রচলিত রয়েছে বেশ কিছু কাহিনি।
যার মধ্যে প্রথমেই বলতে হয় দূর্বা নামক অসুরের কাহিনি। হ্যাঁ, এই নামেই এক অসুরের উল্লেখ মেলে পুরাণে। তবে অসুর বলতে আমরা যেমনটা বুঝি, দূর্বা মোটেও তেমন ছিল না। অন্যান্য অসুরদের মতো কুকর্ম না করে ঈশ্বর সাধনা করেই দিন কাটত তার।
তার পরম আরাধ্য ছিলেন বিষ্ণু। কিন্তু দূর্বার এই আচরণ মোটেই পছন্দ হত না তার মায়ের।
একবার তিনি ছেলেকে আদেশ দিলেন ব্রহ্মার তপস্যা করে অমরত্বের বর প্রার্থনার জন্য। দূর্বা ভালোমতোই জানত এমন বর পেলেই তাকে ত্রিলোক জয় করতে বলবেন তার মা। কিন্তু মাতৃআজ্ঞা তো পালন করতেই হবে। তাই সে তপস্যা শুরু করে। বেশ কয়েক বছর তপস্যার পর দূর্বার সামনে ব্রহ্মা প্রকট হন। ব্রহ্মাকে দেখামাত্রই সে করজোড়ে প্রণাম করে। তারপর সবিস্তারে জানায় কেন সে তপস্যায় বসেছে। সবটা শোনার পর ব্রহ্মা তাকে সত্যি সত্যি অমরত্বের বর দেন। কিন্তু একটু অন্যরকম ভাবে। চতুরাননের আশীর্বাদে দূর্বাসুর পরিণত হয় এক বিশেষ ঘাসে। এবং স্বয়ং ব্রহ্মা বলেন, এই ঘাস যে কোনও পুজোয় আবশ্যিক উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে। সেই থেকেই দূর্বা ঘাসের প্রচলন শুরু।
এ তো গেল দূর্বাসুরের গল্প। এছাড়াও অনেকে বলেন দূর্বা আসলে ত্রিদেবের কোনও এক দেবতার চুলের অংশ। অন্যদিকে এমনটাও শোনা যায়, এই ঘাস আসলে মা সীতা নিজের রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন।
আবার অমৃত উত্থানের প্রসঙ্গেও উল্লেখ মেলে এই বিশেষ ঘাসটির। তবে আরও একটি কাহিনি দূর্বার জনপ্রিয়তার সঙ্গে বিশেষভাবে জড়িত যে কাহিনি থেকেই গণেশের দূর্বা প্রীতির ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
শোনা যায়, কোনও এক ভয়ংকর অসুরের সঙ্গে যুদ্ধের পর গণেশের শরীর ভয়ানক উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল। সেই সময় ২১টি দূর্বাঘাস তাঁর মাথার উপর রাখায় তিনি শান্ত হয়েছিলেন।
সেই থেকেই গণেশ পুজোয় অন্তত ২১টি দূর্বা দিতেই হয়। তবে শুধুমাত্র পৌরাণিক কাহিনি নয়, দূর্বার আবশ্যিকতার নেপথ্যে বিজ্ঞানের ব্যাখ্যাও রয়েছে।
আসলে এই ঘাস শরীর ঠান্ডা রাখতে বিশেষভাবে কাজে লাগে। তাই মাথায় দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ করার কিংবা পুজোর সময় দূর্বার আংটি পরার রেওয়াজ রয়েছে। সব মিলিয়ে বলা যায়, হিন্দু দেবদেবীর পুজোয় ব্যবহৃত অন্যান্য অনেক উপকরণের মতোই দূর্বা মানুষের শরীর সুস্থ রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
"সংগৃহীত"
==========================
সমস্ত পূজাতে দুর্বা ঘাসের প্রয়োজন হয়। কেন? পুরানে কথিত দুর্বাসুর নামে এক কৃষ্ণ ভক্ত অসুর ছিলেন। দুর্বাসুরের মা কৃষ্ণ বিদ্বেষী ছিলেন। দুর্বাসুরের বাবা, ভাই দেবতার হাতে মারা যান। তাই মা দেবতার স্বর্গ রাজ্য ধ্বংস ও দেবতার মৃত্যু চাইতেন। মা দুর্বাসুরকে ত্রিদেবের তপস্যা করে (ব্রক্ষ্মা বিষ্ণু শিব) অমর হয়ে ত্রিলোক জয় করতে আদেশ দিলেন। মা ত্রিলোকের রাজমাতা হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করল। মায়ের কথায় দুর্বাসুর নির্জনে কঠোর তপস্যা শুরু করে। হাজার বছর তপস্যার ফলে তার শরীরের মাংস পচে খসে পড়ে। উঁইপোকা ও পোকামাকড়ে খেয়ে হাড়ও খসে মাটিতে মিশে গেছে। তখনও ত্রিদেবের নামে ধ্যান হচ্ছে। দেবতারা ভয় পেয়ে দুর্বাসুরের তপস্যা ভঙ্গে ব্যর্থ হয়। অবশেষে ত্রিদেব দুর্বাসুরের কাছে এসে ব্রক্ষ্মা কমন্ডুলের জল ছিটিয়ে পুর্ব রুপ দিয়ে বর প্রার্থনা করতে বললেন।
দুর্বাসুর বললেন প্রভু আমি মাতৃ আজ্ঞাতে তপস্যা করেছি। মা অমরত্ব বর নিতে বলেছেন। হে গোবিন্দ আমাকে অমরত্ব বর দিলে মা আবারো খারাপ কাজ করাবে। তাই এমন বর দিন যাতে আমি অমরও হতে পারি আবার আপনার সেবায়ও লাগতে পারি। আর আমার দ্বারা জগতের কারও অনিষ্ট না হয়। ত্রিদেবরা সন্তুষ্ট হয়ে বললেন শুধু ত্রিদেব নয় জগতের সব দেবতার সেবায় লাগবে তুমি। দুর্বাসুর তুমি দুর্বা ঘাসে পরিনত হয়ে সব দেবতার পূজায় লাগবে। অক্ষয় তৃতীয়ায় অক্ষয় বরে জগতে সবাই মারা গেলেও দুর্বা ঘাস কখনো মরবে না। অমর থাকবে পৃথিবীতে। পূজাতে দুর্বা পাতা লাগে তিনটি। তিনটি পাতায় ব্রক্ষ্মা, বিষ্ণু, শিব অবস্থান করেন। জগতে কোন শুভ কাজ ত্রিদেবকে ছাড়া সম্ভব নয়। তাই শুভ কাজে দুর্বা ছাড়া আশীর্বাদ হবে না। সেই থেকেই দেবদেবীর পূজায় দুর্বার প্রয়োজন হয়।
সংগৃহীত
======================
>|| দূর্বা ঘাস ||
প্রশ্ন ছিল কি এমন জিনিষ যাকে পায়ের নিচে পাড়িয়ে চলি, তাকেই আবার সকল দেবতার পুজোয় লাগাই।ওটি ছড়া কোন পুজাই হবেনা।
বস্তুটি সামান্য হয়েও অসামান্য।
পুজোকরার সময় ছাড়া তাকে অবহেলায় আবর্জনা রূপে গণ্য করি।
"কোন দেশেতে তরুলতা
সকল দেশের চাইতে শ্যামল?
কোন দেশেতে চলতে গেলেই
দলতে হয় রে দূর্বা কোমল?"
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের লেখা কবিতার অংশ।
হ্যাঁ চলতে গেলেই পায়ের নিচে দলতে হয় দুর্বাঘাস।
সেই সামান্য বস্তুটি হল দুর্বা ঘাস,
দুর্বা ঘাস সব দেবতার পূজায় লাগে,
অথচ অবহেলায় দূরেই থাকে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এমন কেন?
কি আছে বা কে এই দূর্বা ঘাস?
কেন অবহেলিত হয়েও সকল দেবতার পুজোয় লাগে?
এবার দিচ্ছি সকল প্রশ্নের উত্তর::---
পুরানে কথিত দুর্বাসুর নামে এক কৃষ্ণভক্ত অসুর ছিলেন। দুর্বাসুরের মা কৃষ্ণ বিদ্বেষী ছিলেন। দুর্বাসুরের বাবা, ভাই দেবতার হাতে মারা যান। তাই মা দেবতার স্বর্গ রাজ্য ধ্বংস ও দেবতার মৃত্যু চাইতেন।
দুর্বাসুরের মা মনে মনে ত্রিলোকের রাজমাতা হওয়ার ইচ্ছার কারনে তার ছেলে দুর্বাসুরকে ত্রিদেবের তপস্যা করে (ত্রি দেব হলেন ব্রক্ষ্মা, বিষ্ণু, ও শিব) অমর হয়ে ত্রিলোক জয় করতে আদেশ দিলেন।
মায়ের আদেশে দুর্বাসুর নির্জনে কঠোর তপস্যা শুরু করে। হাজার বছর তপস্যার ফলে তার শরীরের মাংস পচে খসে পড়ে। উঁইপোকা ও পোকামাকড়ে খেয়ে হাড়ও খসে মাটিতে মিশে গেছে। তখনও ত্রিদেবের নামে ধ্যান হচ্ছে। দেবতারা ভয় পেয়ে দুর্বাসুরের তপস্যা ভঙ্গে বহু চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। অবশেষে ত্রিদেব দুর্বাসুরের কাছে এসে ব্রক্ষ্মা কমন্ডুলের জল ছিটিয়ে দূর্বাসুরের পুর্ব রুপ ফিরিয়ে দিয়ে দূর্বাসুরকে বর প্রার্থনা করতে বললেন।
দুর্বাসুর বললেন প্রভু আমি মাতৃ আজ্ঞাতে তপস্যা করেছি। মা অমরত্ব বর নিতে বলেছেন। হে গোবিন্দ আমাকে অমরত্ব বর দিলে মা আবারো খারাপ কাজ করাবে। তাই এমন বর দিন যাতে আমি অমরও হতে পারি আবার আপনার সেবাতেও লাগতে পারি। আর আমার দ্বারা জগতের কারও কোন প্রকার অনিষ্ট না হয়। ত্রিদেবগণ দুর্বাসুরের একম প্রার্থনায় সন্তুষ্ট হয়ে বললেন শুধু ত্রিদেব নয় জগতের সব দেবতার সেবায় লাগবে তুমি। দুর্বাসুর তুমি দুর্বা ঘাসে পরিনত হয়ে সব দেবতার পূজায় লাগবে। অক্ষয় তৃতীয়ায় অক্ষয় বরে জগতে সবাই মারা গেলেও দুর্বা ঘাস কখনো মরবে না। অমর থাকবে পৃথিবীতে। পূজাতে দুর্বা পাতা লাগে তিনটি। তিনটি পাতায় ব্রক্ষ্মা, বিষ্ণু, শিব অবস্থান করেন। জগতে কোন শুভ কাজ ত্রিদেবকে ছাড়া সম্ভব নয়। তাই শুভ কাজে দুর্বা ছাড়া আশীর্বাদ হবে না। সেই থেকেই দেবদেবীর পূজায় দুর্বার প্রয়োজন হয়।
( সংকলিত )
<----আদ্যনাথ রায় চৌধুরী---->
==========================
No comments:
Post a Comment