57>ব্যাখ্যা---দৃগদৃশ্যবিবেক গ্রন্থ---46 টি শ্লোক।
46 টি শ্লোকের ::--
(দৃগ্দৃশ্যবিবেকঃ)
একটি দর্শনমূলক শ্লোকগ্রন্থের সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
46 টি শ্লোকের ব্যাখ্যা::----
আচার্য্য শঙ্করাচার্যের শ্লোকের সরল বাংলায় বিস্তারিত ব্যাখ্যা ।
"দৃগদৃশ্যবিবেক"::-----
– দৃগ--: দর্শক, বা যে দেখে।
– দৃশ্য--: দর্শনীয়, বা যে দেখা হয়।
– বিবেক-- : বিশ্লেষণ বা বিচারের ক্ষমতা।
সুতরাং, "দৃগদৃশ্যবিবেক" অর্থ হলো “দর্শক এবং দর্শনীয়ের মধ্যকার বিভাজন বা পার্থক্য বিশ্লেষণ”।
এটি দর্শনমূলকভাবে সেই পার্থক্য বুঝতে সহায়তা করে যা দর্শক এবং দৃশ্যের মধ্যে বিদ্যমান।
সন্ধি বিচ্ছেদ:
– দৃগ + দৃশ্য = দৃগদৃশ্য
– দৃগদৃশ্য + বিবেক = দৃগদৃশ্যবিবেক .
এইভাবে, দৃগদৃশ্যবিবেক একটি একক শব্দ যা “দর্শক এবং দর্শনীয় বিষয়গুলির মধ্যে পার্থক্য বোঝার ক্ষমতা” বোঝায়।
“দৃগদৃশ্যবিভাগ”= একটি দর্শনমূলক শ্লোকগ্রন্থ, যা দর্শক (দৃগ) এবং দর্শনীয় (দৃশ্য) এর মধ্যে পার্থক্য বিশ্লেষণ করে। এটি সাধারনত দর্শনের ক্ষেত্রে পার্থক্য বোঝাতে সহায়তা করে, যেখানে আত্মজ্ঞান ও বাস্তবতা সম্পর্কিত বিষয় আলোচনা করা হয়।
– দৃগদৃশ্যবিবেক": এটি সাধারণত দর্শনমূলক বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত হয় যেখানে দর্শক ও দৃশ্যের পার্থক্য বোঝানো হয়।---
◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆◆
------------দৃগদৃশ্যবিবেক ::::--------
★1★> শ্লোক ১:
संस्कृत:-----
`रूपं दृश्यं लोचनं दृक् तद्दृश्यं दृक्तु मानसम्।`
`दृश्या धीवृत्तयः साक्षी दृगेव न तु दृश्यते ॥ १॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`রূপং দৃশ্যং লোচনং দৃক্ তদ্দৃশ্যং দৃক্তু মানসাম্।`
`দৃশ্যা ধীভৃত্তয়ঃ সাক্ষী দৃগেভ ন তু দৃশ্যতে ॥ ১॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
রূপ হল দৃশ্য, চোখ হল দর্শক, এবং যে কিছু দেখা হয় সেটি দৃশ্যমান। কিন্তু সাক্ষী, যা আসলে দর্শনকারী, তা দৃশ্যের মতো নয়।১.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে রূপ হচ্ছে যা দেখা যায় (দৃশ্য), চোখ হচ্ছে সেই যা দেখে (দর্শক), এবং যে কিছু দেখা হয় তা দৃশ্যমান। কিন্তু সাক্ষী, বা আসল দর্শনকারী (অর্থাৎ আত্মা বা চেতনা), তা কোনো দৃশ্যের মতো নয়; এটি নিজে দৃশ্যমান নয়। অর্থাৎ, চেতনা বা আত্মা সত্ত্বেও দৃশ্যের মধ্যে অবস্থিত, কিন্তু নিজেই দৃশ্যের মতো নয়।১
★2★>শ্লোক ২:
संस्कृत:---
`नीलपीतस्थूलसूक्ष्मह्रस्वदीर्घादि भेदतः।`
`नानाविधानि रूपाणि पश्येल्लोचनमेकधा ॥ २॥`
বাংলা শ্লোক:---
`নীলপীতস্থূলসূক্ষ্মহ্রস্বদীর্ঘাদি ভেদতঃ।`
`নানাবিধানি রূপাণি পশ্যেল্লোচনমেকধা ॥ ২॥`
বাংলায় অনুবাদ:---
নীল, পীত, স্থূল, সূক্ষ্ম, হ্রস্ব, দীঘির মতো বিভিন্ন ভেদে নানা ধরনের রূপ চোখ একসঙ্গে দেখায়।২.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে চোখ বিভিন্ন রঙ যেমন নীল, পীত, এবং বিভিন্ন ধরনের রূপ যেমন স্থূল, সূক্ষ্ম, হ্রস্ব, দীঘি ইত্যাদি একসঙ্গে দেখতে পারে। অর্থাৎ, চোখ বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য এবং ভেদের মধ্যে থাকা বিভিন্ন রূপকে একসাথে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম।2.
★3★> শ্লোক ৩:-----
संस्कृत:-----
`आन्ध्यमान्द्यपटुत्वेषु नेत्रधर्मेषु चैकधा।`
`सङ्कल्पयेन्मनः श्रोत्रत्वगादौ योज्यतामिदम् ॥ ३॥`
বাংলা শ্লোক:----
`আন্ধ্যমান্ধ্যপটুত্বেষু নেত্রধর্মেষু চৈকধা।`
`সংকল্পয়েনমনঃ শ্রোত্রত্বগাদৌ যোগ্যতামিদম্ ॥ ৩॥`
বাংলায় অনুবাদ:-----
চোখের অন্ধত্ব, মন্দতা, এবং বিশেষত্বের মতো বিভিন্ন ধর্মগুলিতে মন একসঙ্গে চিন্তা করে; এটি শ্রবণ, স্পর্শ ইত্যাদির সাথে সংযুক্ত হয়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:---
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে চোখের অন্ধত্ব, মন্দ দৃশ্যমানতা, এবং বিশেষ ক্ষমতার মধ্যে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য মন একসঙ্গে চিন্তা করতে পারে। এই বৈশিষ্ট্যগুলি শ্রবণ, স্পর্শ ইত্যাদির সাথে যুক্ত হতে পারে। অর্থাৎ, মন চোখের বিভিন্ন অবস্থা ও ধর্মকে একসঙ্গে বিবেচনা করে, যা অন্য ইন্দ্রিয়গুলির সাথে সংযুক্ত হতে পারে।
★★4>শ্লোক ৪:
संस्कृत:---
`कामः सङ्कल्पसन्देहौ श्रद्धाऽश्रद्धे धृतीतरे।`
`ह्रीर्धीर्भीरित्येवमादीन् भासयत्येकधा चितिः ॥ ४॥`
বাংলা শ্লোক:---
`কামঃ সংকল্পসন্দেহৌ শ্রদ্ধা’অশ্রদ্ধে ধৃতীতরে।`
`হ্রীর্ধীর্ভীরিত্যেভমাদীন্ ভাসয়ত্যেকধা চিতিঃ ॥ ৪॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
মন একসঙ্গে কামনা, সংকল্প, সন্দেহ, বিশ্বাস, অবিশ্বাস, ধৃতির মতো বিভিন্ন ধারণাকে প্রদর্শন করে। এটি হ্রী, ধীরতা, ভীরুতা ইত্যাদির ধারণাও বহন করে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে মন একসাথে বিভিন্ন অনুভূতি এবং ভাবনাগুলিকে প্রকাশ করে, যেমন কামনা, সংকল্প, সন্দেহ, বিশ্বাস, অবিশ্বাস এবং ধৃতির মতো গুণাবলি। মন এদের সবকিছুই একসঙ্গে ধারণ করে এবং প্রকাশ করে, যার মধ্যে হ্রী (লজ্জা), ধীরতা (স্থিরতা), ভীরুতা (ভয়) ইত্যাদির ধারণা অন্তর্ভুক্ত থাকে। অর্থাৎ, মন বিভিন্ন মানসিক অবস্থা ও গুণাবলি একসঙ্গে ধারণ করে।
★★5>শ্লোক ৫-----
संस्कृत:-----
`नोदेति नास्तमेत्येषा न वृद्धिं याति न क्षयम्।`
`स्वयं विभात्यथान्यानि भासयेत्साधनं विना ॥ ५॥`
বাংলা শ্লোক:----
`নোদেতি নাস্তমেত্যেষা ন বৃদ্ধিং যাতি ন ক্ষয়ম্।`
`স্বয়ং বিভাত্যথান্যানি ভাসয়েত্সাধনং বিনা ॥ ৫॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
এই চেতনা উঠে না এবং নষ্ট হয় না, এটি বৃদ্ধিও পায় না এবং ক্ষয়ও হয় না। এটি স্বয়ং বিভাসিত হয় এবং অন্যান্য কিছুকে প্রভাবিত করে, কিন্তু এটি কোনও বাহ্যিক উপাদানের প্রয়োজন ছাড়াই।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে চেতনা নিজে উঠছে না বা নষ্ট হচ্ছে না, বৃদ্ধিও পায় না এবং ক্ষয়ও হয় না। এটি নিজের মধ্যেই উজ্জ্বল এবং অন্যান্য কিছুকে প্রভাবিত করে, কিন্তু এটি কোনও বাহ্যিক শক্তি বা উপাদানের প্রয়োজন ছাড়াই আলো দেয়। অর্থাৎ, চেতনা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং বাহ্যিক প্রভাব ছাড়াই প্রকাশিত হয়।
★★6>শ্লোক ৬:-----
संस्कृत:----
`चिच्छायाऽऽवेशतो बुद्धौ भानं धीस्तु द्विधा स्थिता।`
`एकाहङ्कृतिरन्या स्यादन्तःकरणरूपिणी ॥ ६॥`
বাংলা শ্লোক:----
`চিচ্ছায়াঽৱেশতো বুদ্ধৌ ভানং ধীস্তু দ্বিধা স্থিতা।`
`একাহংকৃতিরণ্যস্যাতন্তঃকরনরূপিণী ॥ ৬॥`
বাংলায় অনুবাদ-----
চেতনার প্রতিচ্ছবি হিসেবে বুদ্ধি একাধারে দুটি রূপে অবস্থান করে। এক রূপ হল “আমি” (অহংকৃতিরূপ) এবং অন্যটি হল অন্তর্নিহিত মন (অন্তঃকরণরূপিণী)।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে চেতনার প্রতিচ্ছবি বা ছায়া হিসেবে বুদ্ধি দুটি রূপে প্রকাশিত হয়। এক রূপ হল “আমি” বা অহংকারের ধারণা, এবং অন্য রূপ হল অন্তর্নিহিত মন, যা অন্তর্নিহিত চিন্তা ও অনুভূতির প্রতিনিধিত্ব করে। অর্থাৎ, বুদ্ধি একদিকে অহংবোধ প্রকাশ করে, অন্যদিকে মননশীলতার প্রতিফলন হিসেবে কাজ করে।
★★7>শ্লোক ৭:
संस्कृत:
`छायाऽहङ्कारयोरैक्यं तप्तायःपिण्डवन्मतम्।`
`तदहङ्कारतादात्म्याद्देहश्चेतनतामगात् ॥ ७॥`
বাংলা শ্লোক:----
`ছায়া’হংকারযোরৈক্যম্ তপ্তায়ঃপিণ্ডবন্মতম্।`
`তদহংকারতাদাত্ম্যাদ্দেহশ্চেতনতার্মাগাত্ ॥ ৭॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
অহংকার এবং ছায়ার একত্রিত হওয়া তপ্ত পিণ্ডের মতো ভাবনা থেকে উদ্ভূত হয়। এই অহংকারের সাথে একাত্মতা থেকে শরীর চেতনাশীলতা অর্জন করে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে অহংকার এবং চেতনার ছায়ার একত্রিত হওয়া একটি উত্তপ্ত পিণ্ডের মতো ভাবনায় পরিবর্তিত হয়। এই একাত্মতার মাধ্যমে, অহংকার শরীরের সাথে একত্রিত হয়ে চেতনাশীলতা অর্জন করে। অর্থাৎ, অহংকারের সাথে আত্মপরিচয় এবং শরীরের চেতনশীলতার সম্পর্ক বোঝানো হয়েছে।
★★8>শ্লোক ৮:
संस्कृत:---
`अहङ्कारस्य तादात्म्यं चिच्छायादेहसाक्षिभिः।
`सहजं कर्मजं भ्रान्तिजन्यं च त्रिविधं क्रमात् ॥ ८॥`
বাংলা শ্লোক:---
`হংকারস্য তাদাত্ম্যং চিচ্ছায়াদেহসাক্ষিবিঃ।`
`সহজনং কর্মজনং ভ্রান্তিজনং চ ত্রিধা ক্রমাত্ ॥ ৮॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
অহংকারের সাথে আত্মপরিচয় তিন প্রকারের প্রকৃতি ধারণ করে: স্বাভাবিক (সহজ), কর্মফল থেকে উদ্ভূত (কর্মজ), এবং ভুল ধারণা থেকে উদ্ভূত (ভ্রান্তিজনক)।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে অহংকারের সাথে আত্মপরিচয় তিন ধরনের হয়: একটি হল স্বাভাবিকভাবে (সহজভাবে) যে হয়, আরেকটি হল কর্মফলের দ্বারা যা উদ্ভূত হয় (কর্মজ), এবং তৃতীয়টি হল ভুল ধারণা বা বিভ্রান্তি থেকে উদ্ভূত (ভ্রান্তিজনক)। অর্থাৎ, অহংকারের সাথে আত্মপরিচয়ের বিভিন্ন পর্যায় এবং প্রকৃতি বোঝানো হয়েছে।
★★9>শ্লোক ৯:
संस्कृत:--
`सम्बन्धिनोः सतोर्नास्ति निवृत्तिः सहजस्य तु।`
`कर्मक्षयात् प्रबोधाच्च निवर्तेते क्रमादुभे ॥ ९॥`
বাংলা শ্লোক:---
`সম্পর্কিনঃ সতঃনাস্তি নিবৃত্তিঃ
সহজস্য তু।`
`কর্মক্ষয়াত্ প্রবোধাচ্চ নিবর্তেতেঃ ক্রমাদুবে ॥ ৯॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
সৎ বা সত্যের সাথে সম্পর্কিত বিষয়ের কোনো নিবৃত্তি নেই; তবে সহজ প্রকৃতির (স্বরূপের) সাথে, কর্মক্ষয় এবং প্রজ্ঞার মাধ্যমে নিবৃত্তি ঘটে ক্রমান্বয়ে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে সৎ বা সত্যের প্রকৃতিতে কোনো পরিবর্তন বা নিবৃত্তি ঘটে না। কিন্তু স্বভাবিক প্রকৃতির (অর্থাৎ আত্মসত্তা) ক্ষেত্রে, কর্মের ক্ষয় এবং উপলব্ধির মাধ্যমে ক্রমে নিবৃত্তি বা মুক্তি ঘটে। অর্থাৎ, সৎ বা সত্য সর্বদা অপরিবর্তিত থাকে, কিন্তু সহজ প্রকৃতির সঙ্গে, কর্মের শেষ হওয়া এবং জ্ঞান লাভের মাধ্যমে মুক্তি আসে।
★★10>শ্লোক ১০:
संस्कृत:---
`अहङ्कारलये सुप्तौ भवेद्देहोऽप्यचेतनः।`
`अहङ्कारविकासार्धः स्वप्नः सर्वस्तु जागरः ॥ १०॥`
বাংলা শ্লোক:----
`হংকারলয়ে সুপ্তৌ ভবেদ্দেহোऽপ্যচেতনঃ।`
`হংকারবিকাসার্ধঃ স্বপ্নঃ সর্বস্তু জাগরত্ ॥ ১০॥`
বাংলায় অনুবাদ:-----
যখন অহংকার লীন হয়, তখন শরীরও অচেতন থাকে। অহংকারের বিকাশের অর্ধেক অংশ স্বপ্নের মতো, কিন্তু সমস্ত কিছুই জাগরণের মতো।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:---
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে যখন অহংকার সম্পূর্ণভাবে লীন হয় বা পরিতৃপ্ত হয়, তখন শরীরও অচেতন হয়ে যায়। অহংকারের বিকাশ কেবল একটি স্বপ্নের মতো অস্থায়ী হতে পারে, কিন্তু বাস্তবে সব কিছুই জাগরণের মতো স্পষ্ট থাকে। অর্থাৎ, অহংকারের অস্থিরতার সঙ্গে শরীরের চেতনা এবং বাস্তবতার অবস্থার পার্থক্য বোঝানো হয়েছে।
★★11>শ্লোক ১১:
संस्कृत:--
`अन्तःकरणवृत्तिश्च चितिच्छायैक्यमागता।`
`वासनाः कल्पयेत् स्वप्ने बोधेऽक्षैर्विषयान् बहिः ॥ ११॥`
বাংলা শ্লোক:----
`অন্তঃকরণবৃত্তিশ্চ চিতিচ্ছায়ৈক্যমাগতা।`
`বাসনাঃ कल्पয়েত্ স্বপ্নে বোধে’ক্ষৈর্বিষয়ান্ বহিঃ ॥ ১১॥`
বাংলায় অনুবাদ;-----
অন্তর্নিহিত মনোভাব এবং চেতনার প্রতিচ্ছবি একসাথে আসলে, বাসনাগুলি স্বপ্নে বা বোধে বাহ্যিক বিষয়গুলির ওপর কল্পনা করতে পারে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে যখন অন্তর্নিহিত চিন্তাভাবনা এবং চেতনার প্রতিচ্ছবি একত্রিত হয়, তখন বাসনাগুলি স্বপ্ন বা জাগরণের অবস্থায় বাহ্যিক বিষয়গুলির কল্পনা করতে সক্ষম হয়। অর্থাৎ, যখন চেতনার প্রতিচ্ছবি এবং মনোভাব একসাথে কাজ করে, তখন বিভিন্ন বাসনা স্বপ্নে বা জাগরণের মাধ্যমে বাহ্যিক জিনিসের প্রতি মনোযোগ দেয়।
★★12>শ্লোক ১২:
संस्कृत:---
`मनोऽहङ्कृत्युपादानं लिङ्गमेकं जडात्मकम्।`
`अवस्थात्रयमन्वेति जायते म्रियते तथा ॥ १२॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`মনা’হংকৃত্যুপাদানং লিঙ্গমেকং জডাত্মকম্।`
`অবস্থাত্রয়মন্বেতি যায়তে মরিযতে তদাঃ ॥ ১২॥`
বাংলায় অনুবাদ:-------
মনের অহংকার দ্বারা গঠিত একক লিঙ্গ (শরীর) যে জড় স্বভাবের, তা তিনটি অবস্থার (জন্ম, জীবন, মৃত্যু) মাধ্যমে অভিজ্ঞ হয় এবং এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জন্ম নেয় এবং মৃত্যু ঘটে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, মন এবং অহংকার দ্বারা গঠিত একক লিঙ্গ (শরীর) একটি জড় প্রকারের প্রকৃতির। এই লিঙ্গ বা শরীর তিনটি অবস্থার মাধ্যমে অভিজ্ঞ হয়: জন্ম, জীবন এবং মৃত্যু। অর্থাৎ, একটি শরীর বা লিঙ্গ এই তিনটি অবস্থার মধ্যে দিয়ে চলে, জন্ম হয়, জীবন কাটায় এবং মৃত্যু ঘটে।
★★13> শ্লোক ১৩:
संस्कृत:--
`शक्तिद्वयं हि मायाया विक्षेपावृतिरूपकम्।`
`विक्षेपशक्तिर्लिङ्गादि ब्रह्माण्डान्तं जगत् सृजेत् ॥ १३॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`শক্তিদ্বয়ং হি মায়ায়া বিক্ষেপাভৃতিরূপকম্।`
`বিক্ষেপশক্তির্লিঙ্গাদি ব্রহ্মাণ্ডান্তং জগৎ সৃজেত্ ॥ ১৩॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
মায়ার দুই শক্তি—বিক্ষেপ এবং আভৃতিরূপে—লিঙ্গ ইত্যাদি সৃষ্টি করে, যা সমগ্র ব্রহ্মাণ্ড এবং জগতকে সৃষ্টি করে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে মায়ার দুটি শক্তি থাকে: বিক্ষেপ (বিচ্ছিন্নতা) এবং আভৃতি (আচ্ছাদন)। এই শক্তিগুলির দ্বারা লিঙ্গ এবং অন্যান্য কিছু তৈরি হয়, যা পুরো ব্রহ্মাণ্ড এবং বিশ্বকে সৃষ্টি করে। অর্থাৎ, মায়ার শক্তি জগতের সৃষ্টির পিছনে কাজ করে।
★★14> শ্লোক ১৪:
संस्कृत:--
`सृष्टिर्नाम ब्रह्मरूपे सच्चिदानन्दवस्तुनि।`
`अब्धौ फेनादिवत् सर्वनामरूपप्रसारणा ॥ १४॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`সৃষ্টি নাম ব্রহ্মরূপে সত্যিচিদানন্দবস্তুনি।`
`অব্দৌ ফেনাদিভৎ সর্বনামরূপপ্রসারণা ॥ ১৪॥`
বাংলায় অনুবাদ:-----
সৃষ্টি হলো ব্রহ্মের রূপে, সত্য, চিদানন্দ (সত্য, চেতনা, আনন্দ) বস্তুতে। এটি মহাসাগরের ফেনার মতো বিভিন্ন নাম এবং রূপে বিস্তার লাভ করে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে সৃষ্টি ব্রহ্মের রূপে, যা সত্য, চেতনা, এবং আনন্দের সংমিশ্রণ। এই সৃষ্টি মহাসাগরের ফেনার মতো বিভিন্ন নাম ও রূপে বিস্তার লাভ করে। অর্থাৎ, সৃষ্টির প্রকৃতি ব্রহ্মের গুণাবলির সাথে সম্পর্কিত এবং এটি বহুবিধ রূপে এবং নামের মাধ্যমে বিস্তৃত হয়।
★★15> শ্লোক ১৫:
संस्कृत:---
`अन्तर्दृग्दृश्ययोर्भेदं बहिश्च ब्रह्मसर्गयोः।`
`आवृणोत्यपरा शक्तिः सा संसारस्य कारणम् ॥ १५॥`
বাংলা শ্লোক:----
`অন্তর্দৃগ্দৃশ্যযোর্ভেদং বহিশ্চ ব্রহ্মসর্গয়ঃ।`
`আবৃণোত্মাপারা শক্তিঃ সে সংসারস্যের কারণম্ ॥ ১৫॥`
বাংলায় অনুবাদ:-----
অন্তরীণ দর্শন এবং দৃশ্যের মধ্যে পার্থক্য এবং বাহ্যিক ব্রহ্মসৃষ্টির মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করে, এটি সেই শক্তি যা সংসারের কারণ।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যেই শক্তি অন্তরীণ দর্শন এবং দৃশ্যের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে এবং বাহ্যিক ব্রহ্মসৃষ্টি (বিশ্ব) বিভাজন ঘটায়, সেই শক্তি সংসারের মূল কারণ। অর্থাৎ, সংসারের জটিলতার পিছনে যে শক্তি কাজ করে, তা অন্তরীণ এবং বাহ্যিক দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে।
★★16>শ্লোক ১৬:
संस्कृत:----
`साक्षिणः पुरतो भाति लिङ्गं देहेन संयुतम्।`
`चितिच्छाया समावेशाज्जीवः स्याद्व्यावहारिकः ॥ १६॥`
বাংলা শ্লোক:------
`সাক্ষিণঃ পুরতো ভাতি লিঙ্গং দেহেন সান্নিযুতম্।`
`চিতিচ্ছায়া সমাবেশাজ্জীবঃ স্যাদ্ব্যাবহারিকঃ ॥ ১৬॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
সাক্ষীর সামনে লিঙ্গ (শরীর) প্রদর্শিত হয় যা দেহের সাথে যুক্ত থাকে। চেতনার প্রতিচ্ছবি বা ছায়ার সংমিশ্রণে জীব বা আত্মা অভিজ্ঞ হয়ে ওঠে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, সাক্ষীর সামনে শরীর বা লিঙ্গ প্রদর্শিত হয়, যা দেহের সাথে সংযুক্ত। চেতনার প্রতিচ্ছবি বা ছায়ার মিশ্রণে আত্মা বা জীব অভিজ্ঞতা লাভ করে। অর্থাৎ, শরীর এবং চেতনার প্রতিচ্ছবি একত্রিত হয়ে আত্মার অভিজ্ঞতা সৃষ্টি করে।
★★17>শ্লোক ১৭:
संस्कृत:-----
`अस्य जीवत्वमारोपात् साक्षिण्यप्यवभासते।`
`आवृतौ तु विनष्टायां भेदे भातेऽपयाति तत् ॥ १७॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`অস্য জীবত্বমারোপাত্ সাক্ষিণ্যাপ্যবভাসতে।`
`আবৃতৌ তু বিনষ্টায়াং ভেদে ভাতে’পয়াতি তৎ ॥ ১৭॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
জীবত্বের ধারণার কারণে, সাক্ষীও প্রদর্শিত হয়। তবে আবৃতির অন্তর্গত বিভাজনে এটি হারিয়ে যায় এবং বিভাজনের কারণে নিঃশেষিত হয়ে পড়ে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, জীবনের ধারণার জন্য, সাক্ষী (অর্থাৎ চেতনা) প্রদর্শিত হয়। কিন্তু যখন আবৃতির বা ঢেকে রাখার অবস্থা আসে এবং বিভাজনের কারণে, তখন তা হারিয়ে যায় বা নিঃশেষিত হয়ে পড়ে। অর্থাৎ, জীবনের ধারণার মাধ্যমে চেতনা দেখা যায়, কিন্তু বিভাজন ও আবৃতির কারণে চেতনার সেই প্রকৃত স্বরূপ ধরা পড়ে না।
★★18> শ্লোক ১৮:
संस्कृत:----
`तथा सर्गब्रह्मणोश्च भेदमावृत्य तिष्ठति।`
`या शक्तिस्तद्वशाद्ब्रह्म विकृतत्वेन भासते ॥ १८॥`
বাংলা শ্লোক:---
`তথা সর্গব্রহ্মণোষ্চ ভেদমাবৃত্য তিষ্ঠতি।`
`য়া শক্তিস্তদ্বশাদ্ব্রহ্ম বিকৃতত্বেন ভাসতে ॥ ১৮॥`
বাংলায় অনুবাদ:-----
সৃষ্টির ব্রহ্ম এবং তার মধ্যে পার্থক্যকে আবৃত করে রাখা হয়। যে শক্তি এই ব্রহ্মের অধীনে থাকে, তা বিকৃতিরূপে প্রদর্শিত হয়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে সৃষ্টির ব্রহ্ম এবং অন্যান্য ভেদকে আবৃত বা ঢেকে রাখা হয়। যে শক্তি ব্রহ্মের অধীনে থাকে, তা বিকৃতিরূপে প্রকাশ পায়। অর্থাৎ, সৃষ্টির ব্রহ্মের প্রকৃত সত্তা এবং তার পার্থক্য ঢেকে থাকে, এবং যে শক্তি ব্রহ্মকে নিয়ন্ত্রণ করে তা বিভিন্ন রূপে প্রদর্শিত হয়।
★★19> শ্লোক ১৯:
संस्कृत:-----
`अत्राप्यावृतिनाशेन विभाति ब्रह्मसर्गयोः।`
`भेदस्तयोर्विकारः स्यात् सर्गे न ब्रह्मणि क्वचित् ॥ १९॥`
. বাংলা শ্লোক:----
`অত্রাপ্যাবৃতিনাশেন বিভাতি ব্রহ্মসর্গয়ঃ।`
`ভেদস্তযোর্বিকারের্য স্যাৎ সর্গে ন ব্রহ্মণি ক্চিদ্ ॥ ১৯॥`
বাংলায় অনুবাদ:----
এখানে, আবৃতির সমাপ্তির মাধ্যমে ব্রহ্মের সৃষ্টির প্রকৃতি প্রকাশিত হয়। সৃষ্টিতে পার্থক্যটি বিকৃতির কারণে হয়, কিন্তু ব্রহ্মে তা কখনোই নেই।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, এখানে আবৃতির (ঢেকে রাখা) সমাপ্তির মাধ্যমে ব্রহ্মের সৃষ্টির প্রকৃতি প্রকাশ পায়। সৃষ্টির মধ্যে পার্থক্য এবং পরিবর্তন ঘটে, কিন্তু ব্রহ্মের প্রকৃতিতে কখনও কোনো পার্থক্য বা বিকৃতি হয় না। অর্থাৎ, সৃষ্টির পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন পরিবর্তন দেখা যায়, কিন্তু ব্রহ্মের সত্তা সবসময় অপরিবর্তিত থাকে।
★★20>শ্লোক ২০:
संस्कृत:-------
`अस्ति भाति प्रियं रूपं नाम चेत्यंशपञ्चकम्।`
`आद्यत्रयं ब्रह्मरूपं जगद्रूपं ततो द्वयम् ॥ २०॥`
বাংলা শ্লোক:------
`অস্তি ভাতি প্রিয়ং রূপং নাম চেত্যংশপঞ্চকম্।`
`আদ্যত্রয়ং ব্রহ্মরূপং জগদ্রূপং ততো দ্শযাম্ ॥ ২০॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
“অস্তি” (অস্তিত্ব), “ভাতি” (প্রকাশ), “প্রিয়” (আনন্দ), “রূপ” (রূপ), “নাম” (নাম), এবং “চেতনা” (চেতনা)—এই পাঁচটি অংশ ব্রহ্মের রূপ। প্রথম তিনটি (অস্তি, ভাতি, প্রিয়) ব্রহ্মের প্রকৃতি, এবং পরবর্তী দুটি (রূপ, নাম) জগতের রূপ।
**সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:**
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে ব্রহ্মের পাঁচটি মৌলিক দিক রয়েছে: অস্তিত্ব (অস্তি), প্রকাশ (ভাতি), আনন্দ (প্রিয়), রূপ (রূপ), এবং নাম (নাম)। প্রথম তিনটি (অস্তি, ভাতি, প্রিয়) ব্রহ্মের মৌলিক প্রকৃতি বোঝায়, এবং পরবর্তী দুটি (রূপ, নাম) জগতের প্রকৃতি বোঝায়। অর্থাৎ, ব্রহ্মের প্রকৃতির তিনটি মৌলিক দিক এবং জগতের দুইটি দিক আছে।
★★21> শ্লোক ২১:
संस्कृत:-----
`खवाय्वग्निजलोर्वीषु देवतिर्यङ्नरादिषु।`
`अभिन्नाः सच्चिदानन्दाः भिद्येते रूपनामनी ॥ २१॥`
বাংলা শ্লোক:------
`খবায়্যাগ্নিজলর্বীষু দেবতির্যংনারাদিষু।`
`অভিন্নাঃ সচ্চিদানন্দা ভিদ্যেতে রূপনামনী ॥ ২১॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
অগ্নি, জল, ভূমি, বিষ—এমন বিভিন্ন উপাদান এবং দেবতা, ঋষি, এবং মানবদের মধ্যে, সচ্চিদানন্দের (সত্য, চেতনা, আনন্দ) বিভাজন ঘটে, তবে রূপ এবং নামের মাধ্যমে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে বিভিন্ন উপাদান যেমন অগ্নি, জল, ভূমি, বিষ, এবং বিভিন্ন দেবতা, ঋষি, এবং মানুষের মধ্যে সচ্চিদানন্দ (সত্য, চেতনা, আনন্দ) একসাথে অবস্থিত, কিন্তু রূপ এবং নামের মাধ্যমে তাদের বিভাজন ঘটে। অর্থাৎ, এক অপরের সাথে তাদের মৌলিক স্বরূপ অভিন্ন হলেও, তাদের রূপ এবং নামের দ্বারা পার্থক্য করা হয়।
★★22> শ্লোক ২২:
संस्कृत:----
`उपेक्ष्य नामरूपे द्वे सच्चिदानन्दतत्परः।`
`समाधिं सर्वदा कुर्याद्-हृदये वाऽथवा बहिः ॥ २२॥`
বাংলা শ্লোক:------
`উপেক্ষ্য নামরূপে দ্বে সচ্চিদানন্দতত্পরঃ।`
`সমাধিন্ সর্বদা কুর্যাদ্-হৃদয়ে বা’থবা বাহিঃ ॥ ২২॥`
বাংলায় অনুবাদ:-------
নাম এবং রূপের দুটি পার্থক্যকে উপেক্ষা করে, যারা সচ্চিদানন্দের (সত্য, চেতনা, আনন্দ) প্রতি নিবদ্ধ থাকে, তারা সর্বদা সমাধি (আধ্যাত্মিক আত্মস্থতা) অর্জন করবে, হৃদয়ে অথবা বাহ্যিকভাবে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, নাম এবং রূপের পার্থক্যকে ত্যাগ করে যারা সচ্চিদানন্দের প্রতি নিবদ্ধ থাকে, তারা সর্বদা সমাধি বা আধ্যাত্মিক প্রশান্তি লাভ করতে পারে, হৃদয়ের অভ্যন্তরে অথবা বাহ্যিকভাবে। অর্থাৎ, নাম ও রূপের পার্থক্য ত্যাগ করে আধ্যাত্মিকতার প্রতি নিবদ্ধ থাকার মাধ্যমে চিরস্থায়ী শান্তি লাভ করা যায়।
★★23>শ্লোক ২৩:
संस्कृत:-------
`सविकल्पो निर्विकल्पः समाधिर्द्विविधो हृदि।`
`दृश्यशब्दानुविद्धेन सविकल्पः पुनर्द्विधा ॥ २३॥`
বাংলা শ্লোক:------
`সবিকল্পো নির্মিকল্পঃ সমাধির্দ্বিধো হৃদয়ে।
`দৃশ্যশব্দানুবিধেন সবিকল্পঃ পুনর্দ্বিধা ॥ ২৩॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
সমাধি দুটি প্রকারের হয়—সবিকল্প এবং নির্মিকল্প। সবিকল্প সমাধি দৃশ্য ও শব্দ দ্বারা বিভক্ত হয়ে পুনরায় দুটি প্রকারে বিভক্ত হয়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে সমাধির দুটি প্রকার রয়েছে: সবিকল্প (যেখানে কিছু ধারণা বা পার্থক্য থাকে) এবং নির্মিকল্প (যেখানে কোনো পার্থক্য থাকে না)। সবিকল্প সমাধি, যা দৃশ্য এবং শব্দের দ্বারা প্রভাবিত হয়, আবার দুটি ভাগে বিভক্ত হতে পারে। অর্থাৎ, সমাধির মধ্যে পার্থক্য এবং বিভক্তি দৃশ্য ও শব্দের অভিজ্ঞতার ওপর নির্ভর করে।
★★24>শ্লোক ২৪:
संस्कृत:------
`कामाद्याश्चित्तगा दृश्यास्तत्साक्षित्वेन चेतनम्।`
`ध्यायेद्दृश्यानुविद्धोऽयं समाधिः सविकल्पकः ॥ २४॥`
বাংলা শ্লোক:--------
`কামাদ্যাশ্চিত্তগা দৃশ্যাস্তত্সাক্ষিত্বেন চেতনম্।`
`ধ্যায়েদ্দৃশ্যানুবিদ্ধো’য়ং সমাধিঃ সবিকল্পকঃ ॥ ২৪॥`
বাংলায় অনুবাদ:--------
কাম ইত্যাদি মনোভাব যা দৃশ্যের সাথে সম্পর্কিত এবং সেই দৃশ্যের সাক্ষী হওয়া—এইভাবে চেতনা ধারণ করে। এভাবে, দৃশ্যের প্রভাবিত সমাধি সবিকল্প (অর্থাৎ পার্থক্যযুক্ত) হয়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, কাম ইত্যাদি মনোভাব যা দৃশ্যের সাথে সম্পর্কিত, তা চেতনা ও সাক্ষীত্বের মাধ্যমে অনুভূত হয়। যখন কেউ দৃশ্যের অভিজ্ঞতা নিয়ে ধ্যান করে, তখন সেই সমাধি সবিকল্প (যেখানে কিছু পার্থক্য থাকে) হয়ে থাকে। অর্থাৎ, দৃশ্যের প্রভাবের কারণে সমাধির মধ্যে কিছু পার্থক্য বা বিভাজন থাকে।
★★25>শ্লোক ২৫:
संस्कृत:--------
`असङ्गः सच्चिदानन्दः स्वप्रभो द्वैतवर्जितः।`
`अस्मीति शब्दविद्धोऽयं समाधिः सविकल्पकः ॥ २५॥`
বাংলা শ্লোক:--------
`অসংগঃ সচ্চিদানন্দঃ স্বপ্রভো দ্বৈতবর্জিতঃ।`
`অস্মীতি শব্দবিদ্ধো’য়ং সমাধিঃ সবিকল্পকঃ ॥ ২৫॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যিনি অসংযুক্ত, সচ্চিদানন্দের স্বরূপ, নিজস্ব প্রভু এবং দ্বৈততা থেকে মুক্ত, তিনি “আমি” (অস্মি) শব্দ দ্বারা চিহ্নিত হন। এভাবে, এই সমাধি সবিকল্প (অর্থাৎ পার্থক্যযুক্ত) হয়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যে ব্যক্তি অসংযুক্ত, সচ্চিদানন্দের প্রকৃতি এবং দ্বৈততার অভাবযুক্ত, তিনি “আমি” (অস্মি) শব্দ দ্বারা চিহ্নিত হন। এই প্রকারের সমাধি সবিকল্প (যেখানে কিছু পার্থক্য থাকে) হয়। অর্থাৎ, এমন এক অবস্থা যেখানে “আমি” অনুভূতির মাধ্যমে চেতনা বোঝা যায়, কিন্তু সেই অবস্থা পার্থক্যযুক্ত থাকে।
★★26>শ্লোক ২৬:
संस्कृत:------
`स्वानुभूतिरसावेशाद्दृश्यशब्दावुपेक्ष्य तु।`
`निर्विकल्पः समाधिः स्यान्निवातस्थितदीपवत् ॥ २६॥`
বাংলা শ্লোক:------
`স্বানুভূতিরসাৱেশাদ্দৃশ্যশব্দাওপেক্ষ্য তু।`
`নির্বিকল্পঃ সমাধিঃ স্যাদ্নিবাতস্থিতদীপবৎ ॥ ২৬॥`
বাংলায় অনুবাদ:--------
স্বানুভূতির গভীর উপলব্ধি দ্বারা, দৃশ্য এবং শব্দের উপেক্ষার মাধ্যমে, নির্বিকল্প (অর্থাৎ কোন পার্থক্যহীন) সমাধি লাভ করা যায়, যা বাতাসে স্থিত দীপের মতো নিঃশব্দ থাকে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:--------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যখন গভীরভাবে নিজস্ব অভিজ্ঞতা উপলব্ধি করা হয় এবং দৃশ্য এবং শব্দের প্রতি মনোযোগ দেওয়া হয় না, তখন নির্বিকল্প (যেখানে কোনো পার্থক্য থাকে না) সমাধি অর্জিত হয়। এই সমাধি বাতাসের মধ্যে স্থিত দীপের মতো শান্ত এবং নিঃশব্দ থাকে। অর্থাৎ, সব পার্থক্য দূর করে, একটি শান্ত এবং পরিপূর্ণ সমাধি লাভ করা যায়।
★★27>শ্লোক ২৭:
संस्कृत:------
`हृदीव बाह्यदेशेऽपि यस्मिन् कस्मिंश्च वस्तुनि।`
`समाधिराद्यः सन्मात्रान्नामरूपपृथक्कृतिः ॥ २७॥`
বাংলা শ্লোক:--------
`হৃদীতে বহ্যদেশে’পি যস্মিন্ কস্মিন্ চ বস্তুনি।`
`সমাধিরাদ্যঃ সন্নাত্রান্নামরূপপৃথাক্কৃতিঃ ॥ ২৭॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যে সমাধি হৃদি (অন্তরীণ) অথবা বাহ্যিক স্থানে বা যেকোনো বস্তুর মধ্যে অপ্রভেদভাবে অভিজ্ঞ হয়, তা মূলত সৎ-সত্তা (সন্নাত্র) এর অভিজ্ঞতা, নাম এবং রূপের পার্থক্য ছাড়া।
**সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:**
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, এমন সমাধি যা অন্তরীণ বা বাহ্যিকভাবে যে কোনো বস্তুতে উপলব্ধ হয়, তা আসলে সত্তা (সৎ) এর অভিজ্ঞতা, নাম এবং রূপের পার্থক্য ব্যতিরেকে থাকে। অর্থাৎ, এই সমাধি নাম এবং রূপের পার্থক্যকে অতিক্রম করে, এবং মূল সত্তার একক অভিজ্ঞতা প্রদান করে।
★★28>শ্লোক ২৮:
संस्कृत:------
`अखण्डैकरसं वस्तु सच्चिदानन्दलक्षणम्।`
`इत्यविच्छिन्नचिन्तेयं समाधिर्मध्यमो भवेत् ॥ २८॥`
বাংলা শ্লোক:------
`অখণ্ডৈকারসঙ্কা বস্তু সচ্চিদানন্দলক্ষণম্।`
`ইত্যবিচ্ছিন্নচিন্তেয়ং সমাধিঃ মধ্যমো ভবেত্ ॥ ২৮॥`
বাংলায় অনুবাদ:-----
যে সমাধি যা অবিচ্ছিন্ন চিন্তা দ্বারা সচ্চিদানন্দ (সত্য, চেতনা, আনন্দ) বৈশিষ্ট্যযুক্ত অখণ্ড একক বস্তুকে উপলব্ধি করে, তা মধ্যম স্তরের সমাধি হবে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, একটি সমাধি যা অখণ্ড একক বস্তু (যা সচ্চিদানন্দের বৈশিষ্ট্য বহন করে) সম্পর্কে অবিচ্ছিন্ন চিন্তা দ্বারা উপলব্ধি করে, তা মধ্যম স্তরের সমাধি হিসেবে গণ্য হবে। অর্থাৎ, এমন একটি সমাধি যেখানে একক সত্তার পূর্ণ উপলব্ধি ঘটে এবং চিন্তার মধ্যে কোনো বিভাজন থাকে না।
★★29>শ্লোক ২৯:
संस्कृत:--------
`स्तब्धीभावो रसास्वादात्तृतीयः पूर्ववन्मतः।`
`एतैः समाधिभिः षड्भिर्नयेत् कालं निरन्तरम् ॥ २९॥`
বাংলা শ্লোক:-------
`স্তব্ধীবাভো রসাস্বাদাত্তৃতীয়ঃ পুর্ববন্মতঃ।`
`এতৈঃ সমাধিভিঃ ষড়্ভির্ নযেত্ কালং নিরন্তরম্ ॥ ২৯॥`
বাংলায় অনুবাদ:---------
স্তব্ধতা, অভিজ্ঞতা এবং রসাস্বাদন এই তিনটি সমাধির সাহায্যে পূর্বের মতে, একটানা সময়ের জন্য নির্বিঘ্নভাবে অবস্থান করা উচিত।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, স্তব্ধতা, অভিজ্ঞতা (মধ্যম সমাধি), এবং রসাস্বাদন এই তিনটি সমাধি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে, সময়কে একটানা এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিচালিত করতে হবে। অর্থাৎ, এই ছয় ধরনের সমাধির মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে সময় অতিবাহিত করা উচিত।
★★30>শ্লোক ৩০:
संस्कृत:-------
`देहाभिमाने गलिते विज्ञाते परमात्मनि।`
`यत्र यत्र मनो याति तत्र तत्र समाधयः ॥ ३०॥`
বাংলা শ্লোক:------
`দেহাভিমানেগলিতে বিজ্ঞাতে পরমাত্মনি।
`যত্র যত্র মনো যাতি তত্র তত্র সমাধয়ঃ ॥ ৩০॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যখন দেহের আবেগ বা সত্ত্বা বিলীন হয়ে যায় এবং পরমাত্মা (সর্বোচ্চ আত্মা) উপলব্ধি হয়, তখন যেখানেই মন চলে যায়, সেখানেই সমাধি ঘটে।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যখন দেহের প্রতি অহংকার বা পরিচয় বিলীন হয়ে যায় এবং পরমাত্মার উপলব্ধি ঘটে, তখন মন যেখানে যেখানে চলে যায়, সেখানে সেখানে সমাধি ঘটে। অর্থাৎ, যখন দেহের পরিচয় হারিয়ে যায় এবং পরমাত্মার অনুভব হয়, তখন মন যে কোনো স্থানে চলে গেলেও সেই স্থানেই সমাধি লাভ হয়।
★★31>শ্লোক ৩১:
संस्कृत:----
`भिद्यते हृदयग्रन्थिश्छिद्यन्ते सर्वसंशयाः।`
`क्षीयन्ते चास्य कर्माणि तस्मिन् दृष्टे परावरे ॥ ३१॥`
বাংলা শ্লোক:------
`ভিদ্যতে হৃদয়গ্রন্থিশ্ছিদ্যন্তে সর্বসংশ্যাঃ।`
`ক্ষীয়ন্তে চাস্য কর্মাণি তস্মিন্ দৃষ্টে পরাবরে ॥ ৩১॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে উপলব্ধি ঘটে, তখন হৃদয়ের বাধাগুলি ভেঙে যায়, সমস্ত সন্দেহ দূর হয় এবং সমস্ত কর্ম ক্ষয় হয়ে যায়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যখন পরম সত্যের উপলব্ধি সম্পন্ন হয়, তখন হৃদয়ের সমস্ত বাধা বা গ্রন্থি ভেঙে যায়, সব সন্দেহ দূর হয় এবং সমস্ত কর্ম (ফল) বিলীন হয়ে যায়। অর্থাৎ, সর্বোচ্চ জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে আত্মার মুক্তি ঘটে এবং সমস্ত বৃত্তান্ত শেষ হয়ে যায়।
★★32>শ্লোক ৩২:
संस्कृत:----
`अवच्छिन्नश्चिदाभासस्तृतीयः स्वप्नकल्पितः।`
`विज्ञेयस्त्रिविधो जीवस्तत्राद्यः पारमार्थिकः ॥ ३२॥`
বাংলা শ্লোক:-------
`অবচ্ছিন্নশ্চিদাভাসস্তৃতীয়ঃ স্বপ্নকল্পিতঃ।`
`বিজ্ঞান্যস্ত্রিবিধো জীবস্তত্রাদ্যঃ পারমার্থিকঃ ॥ ৩২॥`
বাংলায় অনুবাদ:-------
অবচ্ছিন্ন চিত্তের অভাস (আত্মস্বরূপ) স্বপ্নের মতো কল্পিত, এবং এটি তিন প্রকারের জ্ঞান হিসেবে বিবেচিত হয়, যেটি আদ্য (মৌলিক) এবং পারমার্থিক (সর্বোচ্চ বাস্তবতা)।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, অবচ্ছিন্ন চিত্তের অভাস (আত্মস্বরূপ) স্বপ্নের মতো কল্পনামূলক এবং এটি তিনটি প্রকারের জ্ঞান হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এটি মৌলিক এবং সর্বোচ্চ বাস্তবতা (পারমার্থিক) হিসাবে বিবেচিত হয়। অর্থাৎ, চিত্তের অভাস যেভাবে কল্পনামূলক হয়ে থাকে এবং তিনটি প্রকারের জ্ঞান হিসেবে ধরা হয়, তা মূলত সর্বোচ্চ সত্যের প্রতি নির্দেশ করে।
★★33> শ্লোক ৩৩:
संस्कृत:------
`अवच्छेदः कल्पितः स्यादवच्छेद्यं तु वास्तवम्।`
`तस्मिन् जीवत्वमारोपाद्ब्रह्मत्वं तु स्वभावतः ॥ ३३॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`অবচ্ছেদঃ কল্পিতঃ স্যাদবচ্ছেদ্যং তু বাস্তবম্।`
`তস্মিন্ জীবত্বমারোপাদ্ ব্রহ্মত্বং তু স্বভাৱতঃ ॥ ৩৩॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যা অবচ্ছেদ (অসীমতা) কল্পিত, তা বাস্তবে অবচ্ছেদ্য (অসীম) হয়। সেই ক্ষেত্রে, জীবত্ব (জীবনের অবস্থা) একটি প্রকৃতির ভিত্তিতে ব্রহ্মত্ব (পরম সত্য) হিসেবে প্রাপ্ত হয়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যা অবচ্ছেদ (অসীমতার ধারণা) কল্পনা করা হয়, তা আসলে বাস্তবে অবচ্ছেদ্য (অসীম) হয়। সেই অবস্থায়, জীবনের অবস্থা (জীবত্ব) প্রকৃতিতে ব্রহ্মত্ব (সর্বোচ্চ সত্য) হিসেবে দেখা হয়। অর্থাৎ, যখন আমরা অবচ্ছেদ বা অসীমের ধারণাকে বাস্তব হিসেবে মেনে নিই, তখন জীবনের প্রকৃত স্বরূপ ব্রহ্মত্বের অংশ হিসেবে ধরা হয়।
★34★>শ্লোক ৩৪:
संस्कृत:------
`अवच्छिन्नस्य जीवस्य पूर्णेन ब्रह्मणैकताम्।`
`तत्त्वमस्यादिवाक्यानि जगुर्नेतरजीवयोः ॥ ३४॥`
বাংলা শ্লোক:(৩৪)-------
`অবচ্ছিন্নস্য জীবস্য পূর্ণেন ব্রহ্মণৈকতাম্।
`তত্ত্বমস্যাাদিভাক্যাণি জগুর্নেতরজীবযোঃ ॥ ৩৪॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যে জীব অবচ্ছেদ (অসীম) এর অধিকারী, সে পূর্ণ ব্রহ্মের সাথে একতা অর্জন করে। “তত্ত্বমসী” ইত্যাদি বাক্যগুলি সেই জীবের জন্য প্রযোজ্য, কিন্তু অন্যান্য জীবের জন্য নয়।--৩৪
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যে জীব অবচ্ছেদ (অসীমতা) অনুভব করে, সে পূর্ণ ব্রহ্মের সাথে একাত্মতা লাভ করে। “তত্ত্বমসী” (তুমি আসলে ব্রহ্ম) এবং অন্যান্য আধ্যাত্মিক বাক্যগুলি সেই জীবের জন্য সত্য, কিন্তু অন্যান্য জীবের জন্য সেগুলি প্রযোজ্য নয়। অর্থাৎ, একমাত্র যে জীব পূর্ণ সত্যের উপলব্ধি লাভ করেছে, কেবলমাত্র সেই জীব এই বিশেষ বাক্যগুলির সত্যতা বুঝতে পারে।
---৩৪.
★35★> শ্লোক ৩৫:
संस्कृत:------
`ब्रह्मण्यवस्थिता माया विक्षेपावृतिरूपिणी।`
`आवृत्याखण्डतां तस्मिन् जगज्जीवौ प्रकल्पयेत् ॥ ३५॥`
বাংলা শ্লোক:-------
`ব্রহ্মণ্যস্থিতা মায়া বিক্ষেপাভৃতিরূপিণী।`
`আবৃত্যাখণ্ডতাং তস্মিন্ জগজ্জীবৌ প্রকল্পযেত্ ॥ ৩৫॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যে মায়া ব্রহ্মের মধ্যে প্রতিষ্ঠিত, যা বিক্ষেপ ও আবৃতির রূপ, তা অখণ্ডতার আবরণের মাধ্যমে জগত এবং জীবকে কল্পনা করে।৩৫
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, মায়া (অদৃশ্য শক্তি) যখন ব্রহ্মের মধ্যে স্থিত হয় এবং বিক্ষেপ (বিভাজন) ও আবৃতির (ঢেকে দেয়া) রূপ ধারণ করে, তখন এটি অখণ্ডতার আবরণের মাধ্যমে জগত এবং জীবকে কল্পনা করে। অর্থাৎ, মায়া ব্রহ্মের প্রকৃতির মধ্যে এসে জগত এবং জীবের বিভাজন ও কল্পনার সৃষ্টি করে।৩৫
★36★>শ্লোক ৩৬:
संस्कृत:------
`जीवो धीस्थचिदाभासो भवेद्भोक्ता हि कर्मकृत्।
`भोग्यरूपमिदं सर्वं जगत् स्याद्भूतभौतिकम् ॥ ३६॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`জীবো धीस्थচিদাভাসো ভবেদ্ভোক্তা হি কর্মকৃত্।`
`ভোগ্যরূপমিদং সর্বং জগৎ স্যাদ্ভূতভৌতিকম্ ॥ ৩৬॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
জীব যে চিত্তের অভাস হিসেবে উপস্থিত, সে কর্মফল ভোগকারী। সমস্ত জগত ভোগ্য রূপ ধারণ করে, যা পদার্থগত এবং ভৌতীয়। ৩৬.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, জীব হচ্ছে চিত্তের একটি অভাস, যা কর্মের ফলস্বরূপ ভোগ করে। সমস্ত জগত ভোগ্য (যা উপভোগ্য) রূপে প্রকাশিত হয় এবং এটি পদার্থগত এবং ভৌতীয়। অর্থাৎ, জীব যখন চিত্তের অভাস হিসেবে বস্তুগত অভিজ্ঞতা লাভ করে, তখন জগতের সব কিছু ভোগ্য রূপে ধরা পড়ে, যা প্রকৃতপক্ষে পদার্থগত এবং ভৌতিক।৩৬
★37★> শ্লোক ৩৭:
संस्कृत:------
`अनादिकालमारभ्य मोक्षात् पूर्वमिदं द्वयम्।`
`व्यवहारे स्थितं तस्मादुभयं व्यावहारिकम् ॥ ३७॥`
বাংলা শ্লোক:----
`অনাদিকালমারম্ভ্য মোক্ষাৎ পূর্বমিদং দ্বয়ম্।`
`ব্যবহারে স্থিতং তস্মাদু্ভযং ব্যাবহারিকম্ ॥ ৩৭॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
অনাদিকাল থেকে মুক্তি পর্যন্ত, এই দুইটি (জীব ও জগত) সম্পর্কিত ধারণা বিদ্যমান। অতএব, এই দুটি বিষয় ব্যবহারে ভিত্তিক এবং বাস্তবিক।৩৭
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, অনাদিকাল (শাশ্বত সময়) থেকে মুক্তি পর্যন্ত, জীব ও জগতের দুটি ধারণা বিদ্যমান। এই দুটি ধারণা ব্যবহারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য এবং বাস্তব। অর্থাৎ, জীব ও জগতের বিভাজন এবং তাদের সম্পর্ক ব্যবহারের ক্ষেত্রে এবং বাস্তব জীবনের প্রেক্ষিতে সত্য।৩৭.
★38★> শ্লোক ৩৮:
संस्कृत:------
`चिदाभासस्थिता निद्रा विक्षेपावृतिरूपिणी।`
`आवृत्य जीवजगती पूर्वे नूत्ने तु कल्पयेत् ॥ ३८॥`
বাংলা শ্লোক:------
`চিত্তঅভাসস্থিতা নিদ্রা বিক্ষেপাভৃতিরূপিণী।`
`আবৃত্য জীবজগতী পূর্বে নুত্নে তু কল্পযেত্ ॥ ৩৮॥`
বাংলায় অনুবাদ:-------
চিত্তের অভাসে অবস্থানকারী নিদ্রা, যা বিভাজন ও আবৃতির রূপ ধারণ করে, তা পুরনো জগত এবং নতুন জগতকে কল্পনা করে।৩৮.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-----
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, চিত্তের অভাসে (আত্মস্বরূপের অভাস) যেভাবে নিদ্রা (ঘুম) অবস্থিত থাকে এবং যা বিভাজন ও আবৃতির রূপ ধারণ করে, তা পুরনো জগত এবং নতুন জগতকে কল্পনা করে। অর্থাৎ, চিত্তের অভাসে নিদ্রার অবস্থায় পুরনো ও নতুন জগতের কল্পনা হয়, যা বিভাজন এবং আবৃতির মাধ্যমে ঘটে।৩৮.
★39★>শ্লোক ৩৯:
संस्कृत:-------
`प्रतीतिकाल एवैते स्थितत्वात् प्रातिभासिके।`
`न हि स्वप्नप्रबुद्धस्य पुनः स्वप्ने स्थितिस्तयोः ॥ ३९॥`
বাংলা শ্লোক:--------
`প্রতীতিকাল এভৈত সিতত্ত্বাত্ প্রাতিভাসিকে।`
`ন হি স্বপ্নপ্রবুদ্ধস্য পুনঃ স্বপ্নে সিতিস্তয়ঃ ॥ ৩৯॥`
বাংলায় অনুবাদ:-------
প্রতিটি অনুভূতির সময়কাল অনুযায়ী, প্রাতিভাসিক (মৌলিক ভ্রান্তি) অবস্থার মধ্যে থাকে। স্বপ্ন থেকে জাগরণের পর পুনরায় স্বপ্নের মধ্যে অবস্থান করা সম্ভব নয়।
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, প্রতিটি অনুভূতির সময়কাল অনুযায়ী, প্রাতিভাসিক (ভ্রমবোধ বা তত্ত্বভাসিক) অবস্থায় থাকে। অর্থাৎ, যে জ্ঞান বা অভিজ্ঞতা প্রাতিভাসিক, তা সময়কাল অনুযায়ী স্থির থাকে। স্বপ্ন থেকে জেগে ওঠার পর, পুনরায় স্বপ্নের মধ্যে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়।৩৯.
★40★> শ্লোক ৪০:
संस्कृत:-------
`प्रातिभासिकजीवो यस्तज्जगत् प्रातिभासिकम्।`
`वास्तवं मन्यतेऽन्यस्तु मिथ्येति व्यावहारिकः ॥ ४०॥`
বাংলা শ্লোক:------
`প্রাতিভাসিকজীবো যস্তজ্জগত্ প্রাতিভাসিকম্।`
`বাস্তবং মন্যতে’ন্যস্তু মিথ্যেতি ব্যাবহারিকঃ ॥ ৪০॥`
বাংলায় অনুবাদ:----------
যে প্রাতিভাসিক (মৌলিক ভ্রান্তি) জীব সেই প্রাতিভাসিক জগতকেই বাস্তব মনে করে, অন্যদের ক্ষেত্রে তা মিথ্যা বলে গণ্য হয়।৪০.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:---------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যে জীব প্রাতিভাসিক (মৌলিক ভুল ধারণার) অবস্থায় থাকে, সে সেই প্রাতিভাসিক জগতকেই বাস্তব হিসেবে বিবেচনা করে। অন্যদিকে, যাদের বাস্তব উপলব্ধি রয়েছে, তারা মনে করেন যে এটি আসলে মিথ্যা। অর্থাৎ, প্রাতিভাসিক জগত একটি ভুল ধারণা হিসেবে দেখা হয় বাস্তব উপলব্ধির মাধ্যমে।৪০.
★41★>শ্লোক ৪১:
संस्कृत:-------
`व्यावहारिकजीवो यस्तज्जगद्व्यावहारिकम्।`
`सत्यं प्रत्येति मिथ्येति मन्यते पारमार्थिकः ॥ ४१॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`ব্যবহারিকজীবো যস্তজ্জগদ্ ব্যবহাৰিকম্।`
`সত্যং প্রত্যেথি মিথ্যেতি মন্যতে পারমার্থিকঃ ॥ ৪১॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যে ব্যবহারিক জীব সেই ব্যবহারিক জগতকেই সত্য মনে করে এবং মিথ্যা মনে করে পারমার্থিক জগৎকে।৪১.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যে জীব ব্যবহারের স্তরে (মৌলিক বাস্তবতা) অবস্থান করে, সে সেই ব্যবহারিক জগতকেই সত্য হিসেবে গ্রহণ করে এবং পারমার্থিক (সর্বোচ্চ বাস্তবতা) জগতকে মিথ্যা মনে করে। অর্থাৎ, ব্যবহারিক স্তরের জীব বাস্তবতা হিসেবে সেই জগতকেই মানে যা সে প্রত্যক্ষ করে, এবং সর্বোচ্চ বাস্তবতা হিসেবে বিবেচিত জগতকে মিথ্যা মনে করে।৪১.
★42★>শ্লোক ৪২:
संस्कृत:-------
`पारमार्थिकजीवस्तु ब्रह्मैक्यं पारमार्थिकम्।`
`प्रत्येति वीक्षते नान्यद्वीक्षते त्वनृतात्मना ॥ ४२॥`
বাংলা শ্লোক:-----
`পারমার্থিকজীবস্তু ব্রহ্মৈক্যম্ পারমার্থিকম্।`
`প্রত্যেৎ ভীক্ষতে নান্যদ্বীক্ষতে ত্বনৃতাত্মনা ॥ ৪২॥`
বাংলায় অনুবাদ:-------
যে পারমার্থিক জীব, সে ব্রহ্মের একত্বকে পারমার্থিকভাবে উপলব্ধি করে। সে অন্য কিছুর দিকে নজর দেয় না, কারণ তার প্রকৃত স্বরূপ অচল।৪২.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যে জীব পারমার্থিক স্তরে (সর্বোচ্চ বাস্তবতা) অবস্থান করে, সে ব্রহ্মের একত্বকে সত্যিকারভাবে উপলব্ধি করে। এই জীব অন্য কোনো কিছুর দিকে মনোনিবেশ করে না, কারণ তার প্রকৃত স্বরূপ অচল ও অদ্বিতীয়। অর্থাৎ, পারমার্থিক জীব শুধুমাত্র ব্রহ্মের একত্বকে বুঝতে পারে এবং অন্য কিছুকে বিভ্রান্তি হিসেবে দেখে।
৪২.
★43★> শ্লোক ৪৩:
संस्कृत:-------
`माधुर्यद्रवशैत्यानि नीरधर्मास्तरङ्गके।`
`अनुगम्याथ तन्निष्ठे फेनेऽप्यनुगता यथा ॥ ४३॥`
বাংলা শ্লোক:------
`মাধুর্যদ্রবশৈত্যানি নীরধর্মাস্তরঙ্গকে।`
`অনুগম্যাথ তন্নিষ্ঠে ফেনেপ্যনুগতা যথা ॥ ৪৩॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
মধুরতা, তরলতা এবং শীতলতা, যা সমুদ্রের তরঙ্গে বিদ্যমান, তা তরঙ্গের অনুসরণে থাকে; যেমনভাবে ফেনাও তরঙ্গকে অনুসরণ করে।৪৩.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, সমুদ্রের তরঙ্গের মধ্যে যেমন মধুরতা, তরলতা, এবং শীতলতা থাকে, সেগুলি তরঙ্গের সাথে সঙ্গেই থাকে। ঠিক তেমনি, ফেনা তরঙ্গের সাথে সঙ্গ দেয়। অর্থাৎ, তরঙ্গের গুণাবলী যেমন মধুরতা, তরলতা, এবং শীতলতা তরঙ্গের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য এবং ফেনাও তরঙ্গের সঙ্গী।৪৩.
★44★>শ্লোক ৪৪:
संस्कृत:----------
`साक्षिस्थाः सच्चिदानन्दाः सम्बन्धाद्व्यावहारिके।`
`तद्द्वारेणानुगच्छन्ति तथैव प्रातिभासिके ॥ ४४॥`
বাংলা শ্লোক:-------
`সাক্ষিস্থাঃ সচ্চিদানন্দাঃ সম্পর্কাদ্ব্যাবহরিকেঃ।`
`তদ্দ্বারেনানুগচ্ছন্তি তদৈব প্রাতিভাসিকে ॥ ৪৪॥`
বাংলায় অনুবাদ:------
যে সচ্চিদানন্দ (সত্য, চেতনা, আনন্দ) সাক্ষিরূপে বিদ্যমান, তা সম্পর্কের মাধ্যমে ব্যবহারিক স্তরে পরিচালিত হয়। এই সম্পর্কের মাধ্যমে তা প্রাতিভাসিক স্তরে অনুসরণ করে।৪৪.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:-------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, সচ্চিদানন্দ (সত্য, চেতনা, আনন্দ) যা সাক্ষিরূপে বিদ্যমান, তা ব্যবহারিক স্তরের সম্পর্কের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। অর্থাৎ, সচ্চিদানন্দ প্রাতিভাসিক স্তরের বাস্তবতা অনুসরণ করে, যেমনভাবে তা ব্যবহারিক সম্পর্কের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।৪৪.
★45★>শ্লোক ৪৫:
संस्कृत:--------
`लये फेनस्य तद्धर्मा द्रवाद्याः स्युस्तरङ्गके।`
`तस्यापि विलये नीरे तिष्ठन्त्येते यथा पुरा ॥ ४५॥`
বাংলা শ্লোক:---------
`লয়ে ফেনস্য তদ্ধর্মা দ্রবাদ্যাঃ স্যুস্তরঙ্গকে।
`তস্যাপি বিলয়ে নীরে তিষ্ঠন্ত্যেতেঃ যথা পুরা ॥ ৪৫॥`
বাংলায় অনুবাদ:-------
যখন তরঙ্গের বিলয়ে ফেনার গুণাবলী বিলীন হয়, তখন তরঙ্গের গুণাবলীও জলেতে স্থিত থাকে, যেমন আগে ছিল।৪৫.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:--------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যখন তরঙ্গের বিলয়ে ফেনার গুণাবলী (মধুরতা, তরলতা ইত্যাদি) বিলীন হয়, তখন তরঙ্গের গুণাবলীও জলতে অবশিষ্ট থাকে, যেমন পূর্বে ছিল। অর্থাৎ, তরঙ্গ বিলীন হয়ে যাওয়ার পরও তার গুণাবলী জলে অব্যাহত থাকে, যেমন আগের অবস্থায় ছিল।৪৫.
★★★46>শ্লোক ৪৬:
संस्कृत:------
`प्रातिभासिकजीवस्य लये स्युर्व्यावहारिके।`
`तल्लये सच्चिदानन्दाः पर्यवस्यन्ति साक्षिणि ॥ ४६॥`
বাংলা শ্লোক:----
`প্রাতিভাসিকজীবস্য লয়ে স্যুরব্যবহারিকে।`
`তল্লয়ে সচ্চিদানন্দাঃ পর্যবস্যন্তি সাক্ষিণি ॥ ৪৬॥`
বাংলায় অনুবাদ:-----
যখন প্রাতিভাসিক জীব বিলীন হয়, তখন ব্যবহারের স্তরের সচ্চিদানন্দ (সত্য, চেতনা, আনন্দ) সাক্ষিরূপে অবস্থিত থাকে।৪৬.
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:------
এই শ্লোকে বলা হয়েছে যে, যখন প্রাতিভাসিক জীব (ভ্রান্ত ধারণার জীব) বিলীন হয়ে যায়, তখন ব্যবহারের স্তরের সচ্চিদানন্দ (সত্য, চেতনা, আনন্দ) সাক্ষিরূপে অবস্থিত থাকে। অর্থাৎ, প্রাতিভাসিক জীব বিলীন হলেও, সচ্চিদানন্দ যেভাবে বাস্তবতার সাক্ষী হিসেবে অবস্থিত থাকে, তেমনিভাবে এটি অব্যাহত থাকে।৪৬.
`इति भारती तीर्थ स्वामिना विरचितः`
`दृग्दृश्यविवेकः समाप्तः ॥`
বাংলা অনুবাদ:-----
`এইভাবে ভারতী তীর্থ স্বামীর দ্বারা রচিত`
`দৃগদৃশ্যবিভাগ সমাপ্ত হল ॥`
সরল বাংলায় ব্যাখ্যা:----
এটি ভারতী তীর্থ স্বামী দ্বারা রচিত “দৃগদৃশ্যবিভাগ” (দৃশ্য এবং দর্শনের বিচারে) গ্রন্থের সমাপ্তি।
=====================
No comments:
Post a Comment